পনেরো-ষোলো বয়সেই ইউরোপের বড় বড় ক্লাবে নাম লিখিয়ে ফেলেন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের অনেক ফুটবলার। চার-পাঁচ গোল দিলে, ‘নতুন মেসি’ আর ‘নতুন নেইমার’র তকমা পান অনেকে। সেই তুলনায় হাইপ অনেক কম জার্মানির তরুণ ফুটবলারদের।
দুর্দান্ত দলগত পারফরম্যান্সে ইন্দোনেশিয়ায় প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে জার্মানি। কিন্তু সেই দলের ফুটবলাদের ‘নতুন বালাক’ কিংবা ‘নতুন ক্লোজা’ নামে ডাকা হচ্ছে না।
তাই বলে বয়সভিত্তিক এই দলে নতুন দিনের তারকা নেই, বিষয়টি এমন নয়। শিরোপা জয়ী দলটিতে বার্সেলোনা লা মেসিয়া, বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের একাডেমির অনেক ফুটলার আছেন। আগামী কয়েক বছরের পরে বদলে দিতে পারেন জার্মান ফুটবলের গতিপথ।
২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের পর উল্টো পথে চলে জার্মানি জাতীয় ফুটবল দল। এর জাতীয় দল জায়গা করে নিলে, লিখতে পারেন হাওয়া বদলের গল্প। প্যারিসে ব্রুনার, তেমনই একজন। জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের যুব দলে খেলেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ছয় ম্যাচে ৮ গোল করেছেন কঙ্গো বংশোদ্ভূত এই জার্মান।
যৌথভাবে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বল জিতেছেন এই লেফট উইঙ্গার। ভবিষ্যতে বর্তমান জার্মান দলের তরুণ তুর্কি জামাল মুসিয়ালার সঙ্গে তার জুটির রসায়ণ যে কোনো দলের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।
জার্মান ফুটবলারদের অন্য দেশের একাডেমিতে খুব একটা দেখা যায় না। সেই হিসেবে নোহা ডারভিস ব্যতিক্রম। বার্সার একাডেমিতে লা মেসিয়াতে বেড়ে ওঠা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপজয়ী তারকার। এরই মধ্যে বার্সার বিশেষ নজরে আছেন তরুণ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বিশ্বকাপ জেতা এই তারকা ১৬ ম্যাচে করেছেন সাত গোল। স্বাভাবিকভাবে তার প্রতিভায় মুগ্ধ বার্সার প্রশাসন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে জন্ম নেওয়ার ফুটবলারদের মধ্যে ডারভিস সেরা।
গোলকিপার ম্যাক্স এক্সামিটের গড়ে ওঠা জার্মান লিগের রেকর্ড শিরোপাজয়ী বায়ার্ন মিউনিখ একাডেমিতে। রক্ষণভাগের তারকা ম্যাক্সিমিলিয়ান সেবাস্তিয়ানও খেলেন জার্মান চ্যাম্পিয়নদের দলে। একই সঙ্গে তারকা হওয়ার দৌড়ে আছেন হফেনহেইমের সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড ম্যাক্স মোরেস্টেড।
যাকে বলা হচ্ছে জার্মান ফুটবলের ভবিষ্যৎ তারকা। এরই মধ্যে জার্মান লিগ বুন্দেসলিগা অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ৯ ম্যাচে ১০ গোলের পাশাপাশি দুটি অ্যাসিস্ট রয়েছে তার। উচ্চতা কাজে লাগিয়ে গোল করতে জুড়ি নেই তার।
বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান রেখেছেন নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত জার্মান উইনার্স ওসাওয়ে। আরবি লাইপজিগে এই ফুটবলার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হয়েও সেন্ট্রাল মিডে দুর্দান্ত খেলেছেন। রক্ষণভাগের আরেক তারকা ফিন জেল্টসকে শুধু ভবিষ্যৎ তারকা নয় নেতাও মনে করা হচ্ছে। প্রথমসারির ক্লাব নুরেমবার্গ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। সব মিলিয়ে বয়সভিত্তিক দলের এই তারকাদের নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতে পারেন জার্মান সমর্থকরা।
মন্তব্য করুন