২০২২ সালের ২ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল ইতিহাসের এক কলঙ্কময় দিন। এক বছর আগে ইন্দোনেশিয়ান প্রিমিয়ার সকার লিগে মালাংয়ের ‘কাঞ্জুরুহান’ স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি এবং পার্সেবায়া সুরাবায়ার ম্যাচে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেদিনের সেই ট্র্যাজেডিতে পুলিশের টিয়ার গ্যাসে ও পদদলিত হয়ে ১৩৫ জন দর্শক মারা যান। আর এই ‘কাঞ্জুরুহান ট্র্যাজেডির এক বছর স্মরণ করে সুষ্ঠু বিচারের জন্য আহ্বান করেছে নিহতদের পরিবারগুলো।
এক বছর আগে মালাংয়ের কাঞ্জুরুহান ট্র্যাজেডিতে নিহত ইন্দোনেশিয়ানদের প্রতি পরিবার স্টেডিয়ামে মোমবাতি প্রজ্বালন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে তাদের পরিবারগুলো। তারা নতুন করে বিচারের আহ্বান করেছে।
মালাং থেকে কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়াম পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন কাফেলা দিয়ে স্টেডিয়ামে আসে মোমবাতি প্রজ্বালন করে তাদের স্বজনদের স্মরণ করতে। গত বছরের ট্র্যাজেডির পর প্রথমবারের মতো কিছু লোক স্টেডিয়ামের ভেতর প্রবেশ করেছিল। নিহত ১৩৫ জনের তিন বছরের কম বয়সী শিশুরাও ছিল।
রবিবার দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে প্রার্থনা। ১৩৫ জন দর্শক নিহত হওয়ায় শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে কিছু শোকার্ত ব্যক্তি কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সেদিনের ট্র্যাজেডিতে নিজের ২০ বছর বয়সী ছেলে আগুস রিয়ান স্যাহ প্রতমা পুত্রকে হারিয়েছিলেন রিনি হানিফা। নিহত পুত্রের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে তিনি সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমিসহ ভুক্তভোগী কিছু পরিবার সেদিনের সেই মর্মান্তিক ঘটনা সহ্য করতে পারেনি। কিছু লোক অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। আমার মনে হয়েছিল যেন আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুধু ১৩ নম্বর গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম এবং ভেবেছিলাম আমার সন্তানটি কেমন অনুভব করেছিল যখন সে টিয়ার গ্যাসের কারণে শ্বাস নিতে পারছিল না। আমরা সবাই কল্পনা করছিলাম কীভাবে আমাদের বাচ্চারা সেখানে মারা গিয়েছিল, সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিল কারণ তাদের ফুসফুস জ্বলছিল।’
২০২২ সালে মালাংয়ের ‘কাঞ্জুরুহান’ স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি এবং পার্সেবায়া সুরাবায়ার ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল স্বাগতিক আরেমা এফসি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে ২৩ বছরে প্রথম হার মেনে নিতে পারেনি স্বাগতিক সমর্থকরা। তারা ফুটবল পিচে নেমে আসে এবং পার্সেবায়ার দর্শকদের উপর হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেছিল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। সেদিন পদদলিত ও শ্বাস-প্রশ্বাসের অভাবে ১৩৫ জন দর্শক মারা যান। এ ছাড়া প্রায় ৪০০ দর্শক আহত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন