লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারের দ্রুত গোলে বেইজিংয়ের ওয়ার্কার্স স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়তে হয় আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে। যদিও এমন বিড়ম্বনায় হরহামেশাই পড়েন তিনি।
গ্যালারি থেকে নেমে মাঠে ঢুকে পড়েন এক চীনা মেসি ভক্ত। নিরাপত্তা কর্মীদের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরেন মেসিকে। আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে ছুঁয়ে আনন্দে আত্মহারা হন সেই ভক্ত। উল্লাসের মাধ্যমে প্রকাশ করতে থাকেন সেই আনন্দ।
এরপর ছুটে চলে যান আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দিকে। তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চেষ্টা করেন মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ততক্ষণে তাকে ধরে ফেলেন নিরাপত্তা কর্মীরা। অনেকটা চেঙদোলা করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠের বাইরে।
খেলার মাঠে এভাবে ঢুকে পড়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এসব নিয়ে ভাবছেন না জং জাউ নামের সেই মেসি ভক্ত। গ্রহের সেরা ফুটবলারকে ছুঁতে পারার আনন্দে, আনন্দিত তিনি। জং জাউ নামের সেই ভক্ত বলেন, ‘আমি এবার মেসিকে জড়িয়ে ধরতে পেরেছি, কিন্তু অটোগ্রাফ নিতে পারিনি। পরেরবার মায়ামিতে গিয়ে মেসির খেলা দেখব। সেখানে তার কাছে অটোগ্রাফ চাইব। তবে আমি আর কখনো নিরাপত্তা ডিঙিয়ে মাঠে প্রবেশ করব না। আজকের ভুলের পুনরাবৃত্তি আর কখনো হবে না। এটি আমার ভুল হয়েছে। এর জন্য আমি দুঃখিত।’
অবশ্য মেসির জন্য এ ঘটনা নতুন নয়। এর আগে বহুবার এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে তাকে। এমনকি খেলা থামিয়ে ভক্তদের আবদার পূরণ করতে হয়েছে তাকে। আর গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে মেসিকে উদ্দেশ করে এক দর্শক মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন তিনবার। সেই ম্যাচের স্মৃতি মনে করে মেসি বলেছিলেন, এসব ঘটনা অনেক সময় তাকে ভয় পাইয়ে দেয়।
জ্যামাইকার বিপক্ষে ওই প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে জোড়া গোল করেছিলেন মেসি। ম্যাচটিতে নিরাপত্তারক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে তিনবার মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন দর্শক। এমনকি একজন নিজের পিঠে মেসির অটোগ্রাফ নেওয়ারও চেষ্টা করেন।
পরে আর্জেন্টিনার ক্রীড়া দৈনিক ওলে-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনেককিছুর মধ্যে ভক্তদের এসব আচরণ নিয়েও কথা বলেন মেসি। খেলা চলাকালীন ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ঢুকে পড়লে অনেক সময় শাস্তিও পেতে হয় ওই দর্শকদের। পরিণতি জেনেও ভক্তদের এভাবে মাঠে ঢুকে পড়া মেসির কাছে ভালোবাসার নিদর্শন।
আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘কেউ জানে না নিরাপত্তারক্ষীরা কেমন আচরণ করবে। কখনো কখনো তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, যেগুলো আসলে প্রয়োজন নেই। তখন সবার জন্যই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।’
আর ভক্তদের ভালোবাসার মূল্য দিতে কাতারে নিজের সেরাটা দিয়ে জেতেন বিশ্বকাপের শিরোপা। তিন যুগ পর বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে ভাসে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।
মন্তব্য করুন