‘সবকিছুই সম্ভব’ এই কথাটাই বলেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি, গত সপ্তাহে এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনালের কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর। কথাটা যতই পুরনো হোক, চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের নামের পাশে দাঁড়ালে সেটা কিভাবে যেন সত্যি হয়ে যায়।
কিন্তু এবার…? ৩-০ ব্যবধান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইউরোপের মঞ্চে ফেরার ইতিহাস তাদের আছে মাত্র একবার। ডেক্লান রাইসের অবিশ্বাস্য দুটি ফ্রি-কিক আর মিকেল মেরিনোর দুর্দান্ত গোলে প্রথম লেগেই কার্যত এগিয়ে গেছে আর্সেনাল।
আনচেলত্তি নিজেই বললেন, ‘দেখলে মনে হবে কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে ফুটবলে সবকিছু সম্ভব। সম্ভাবনা কম, কিন্তু আমরা শতভাগ চেষ্টা করব।’
ইতিহাসও কিন্তু রিয়ালের পক্ষে নয়। পিছিয়ে পড়া রিয়াল মাদ্রিদ মানেই কামব্যাক। পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটি বা চেলসির মতো দলও এই ‘বার্নাব্যু ম্যাজিক’-এর শিকার। তবে এত বড় ব্যবধান থেকে ফেরার গল্পটা বিরল।
১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে ডার্বি কাউন্টির কাছে প্রথম লেগে ৪-১ গোলে হেরে দ্বিতীয় লেগে ৫-১ জিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তারা। চ্যাম্পিয়নস লিগ যুগে ৩ বা তার বেশি গোলে পিছিয়ে থাকা দল মাত্র চারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বার্সেলোনার ‘লা রেমনতাদা’ হয়তো মনে আছে — ২০১৭ সালে পিএসজিকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া সেই ঐতিহাসিক রাত। রিয়ালের সাম্প্রতিক লড়াইয়ে এবং ফর্মে সেই রকম গল্পের ইঙ্গিত আপাতত অনুপস্থিত।
এদিকে আর্সেনালের সামনেও রয়েছে সুখস্মৃতি। প্রথম লেগে তিন গোলে এগিয়ে থাকা ইংলিশ দলগুলোর অতীতে এগিয়ে যাওয়ার রেকর্ড একশ শতাংশ। আরও বড় কথা, রিয়ালের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত আর্সেনাল অপরাজিত। ৩ ম্যাচে ২ জয়, ১ ড্র — আর মজার ব্যাপার, কোনো গোলও খায়নি।
তবু আশা ছাড়েননি বেলিংহ্যাম। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহ্যাম জানালেন, ‘এমন রাত রিয়াল মাদ্রিদের জন্যই তৈরি। ইতিহাস গড়ার, পরিচিত জায়গায় পরিচিত গল্প লিখতে পারার রাত। আমরা বিশ্বাস করি।”
আর গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া বললেন, ‘প্রথম ২০ মিনিটেই যদি ১-২ গোল পাই, তাহলে সব সম্ভব।’
বার্নাব্যুর বাতাসে এখনো বাজছে সেই পুরনো সুর — ‘অবিশ্বাস্যকেও বাস্তবে রূপ দেয় রিয়াল।’ তবে এবার কি সত্যিই ইতিহাসের ভারে চাপা পড়বে আনচেলত্তির শিষ্যরা? নাকি আরও একবার ‘রিয়াল ম্যাজিক’ দেখবে ফুটবল বিশ্ব? উত্তর আসছে বুধবার রাতেই।
মন্তব্য করুন