বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম লেগের ৪-০ গোলের বিধ্বংসী হার- সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠা? বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের জন্য অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। সেই ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করতে সিগনাল ইদুনা পার্কে যা করল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, সেটি ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে সাহসী লড়াইগুলোর একটি হয়ে থাকবে। যদিও শেষ পর্যন্ত ৩-১ ব্যবধানে জিতেও ৫-৩ অ্যাগ্রিগেটে বিদায় নিতে হলো নিকো কোভাচের দলকে।
এই ম্যাচের নায়ক গিনির স্ট্রাইকার সেরহু গিরাসি। প্রথমার্ধের ১১ মিনিটেই সাহসী ‘পানেনকা’ পেনাল্টিতে গোল করে ম্যাচে প্রাণ ফেরান তিনি। বার্সা গোলরক্ষক ড্রিবল করতে গিয়ে ফাউল করেন পাসকাল গ্রসকে, সেখান থেকেই আসে স্পট কিক।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও বাজিমাত করেন গিরাসি। ৪৯ মিনিটে কর্নার থেকে রামি বেনসেবাইনি বল বাড়ান, সেখান থেকে মাথা ছুঁইয়ে দ্বিতীয় গোল করেন এই ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড। তখন মনে হচ্ছিল ইতিহাস হয়তো সত্যিই রচিত হবে।
কিন্তু হতাশার মুহূর্ত আসে মাত্র পাঁচ মিনিট পর। ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডার বেনসেবাইনি ভুল করে বার্সার ফেরমিন লোপেজের ক্রসে নিজের জালেই বল ঠেলে দেন। এই আত্মঘাতী গোলে বার্সা অ্যাগ্রিগেট ব্যবধানে আবারও ৩ গোলে এগিয়ে যায়।
তবুও থেমে থাকেননি গিরাসি। ৭৬ মিনিটে বার্সা রক্ষণভাগের বিশৃঙ্খলা কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত ভলিতে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। ১৩ ম্যাচে এটি তার ১৩তম গোল।
শেষ মুহূর্তে বদলি খেলোয়াড় জুলিয়ান ব্রান্ডট গোল করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। এরপর আরও একাধিক সুযোগ নষ্ট করে ডর্টমুন্ড। গ্রসের গোল অফসাইডের ফাঁদে পড়ে বাতিল হয়। বার্সা গোলকিপারও দুর্দান্ত দুটি সেভ করেন।
বার্সা রক্ষা পায় শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত। ছয় বছর পর তারা উঠলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে। যেখানে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান বা বায়ার্ন মিউনিখের। প্রথম লেগে ইন্টার ২-১ গোলে এগিয়ে।
ডর্টমুন্ড কোচ নিকো কোভাচ ম্যাচের আগে বলেছিলেন ‘মিরাকল লাগবে’। বার্সা ২০১৭ সালে পিএসজির বিপক্ষে ৪-০ হার থেকে ফিরেছিল ৬-১ জয়ে। কোভাচ চেয়েছিলেন তেমন কিছু। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
তবে বার্সা তিন শিরোপার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো। লা লিগায় চার পয়েন্ট এগিয়ে, মাস শেষে কোপা দেল রের ফাইনালে মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদের। আর এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত।
মন্তব্য করুন