সবকিছুই যেন লেখা ছিল সেই পরিচিত চিত্রনাট্যে—মাঠে এলেন লিওনেল মেসি, পেছনে পড়া দলকে টেনে তুললেন সামনে, আর শেষ মুহূর্তে এক পেনাল্টি শটে গড়লেন জয়ের মোহর।
কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে মেসির ইন্টার মায়ামি। ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলের তৃতীয় গোলটি করেন মেসি, যা নিশ্চিত করে তাদের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন।
প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারা ইন্টার মায়ামি বুধবার ম্যাচের শুরুতেই আরও এক ধাক্কা খায়। নবম মিনিটে অ্যারন লংয়ের গোলে এগিয়ে যায় এলএএফসি। তখন দুই লেগে পিছিয়ে পড়ে ২-০ ব্যবধানে, আর অ্যাওয়ে গোল নিয়মে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে যায় ফ্লোরিডার ক্লাবটি।
তবে এরপর মেসি যেন আবার মনে করিয়ে দিলেন ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের সেই ফাইনালকে। ৩৫তম মিনিটে বক্সের মাথা থেকে বাঁ পায়ের নিঁখুত এক শটে ম্যাচে সমতা ফেরান আর্জেন্টাইন জাদুকর। ইন্টার মায়ামির হয়ে এটি ছিল তার ৪৮ ম্যাচে ৪১তম গোল।
৬১তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইন্টার মায়ামি। নোয়া অ্যালেনের চিপ বল একবারে পোস্টে ঢুকে যায় গোলরক্ষক লরিস ও রেডোন্ডোর অপ্রস্তুত অবস্থায়। শুরুতে অ্যালেনের নামে লেখা হলেও পরে গোলটি রেডোন্ডোর নামে দেওয়া হয়।
এই গোলে দুই লেগ মিলিয়ে সমতা আসে ২-২। কিন্তু তখনও অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে এগিয়ে ছিল এলএএফসি।
৬৭তম মিনিটে মেসির পাস থেকে লুইস সুয়ারেস গোল করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সে গোল। তবে ইন্টার মায়ামি হাল ছাড়েনি।
৮৪তম মিনিটে ভিডিও রিভিউর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের হ্যান্ডবলের সিদ্ধান্ত আসে, আর সেখানেই আসে ম্যাচের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত—পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। হুগো লরিসের বিপক্ষে আরও একবার নির্ভুল শট, যেমনটা তিনি করেছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনালেও।
ম্যাচ শেষে আনন্দে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে উল্লাস করেন ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো। তার চোখে মেসি যে আবারও 'নায়ক'।
সেমিফাইনালে ইন্টার মায়ামি খেলবে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে। প্রথম লেগ হবে ২২, ২৩ অথবা ২৪ এপ্রিল।
একের পর এক নাটকীয়তা আর শেষ পর্যন্ত মেসির ছোঁয়ায় জয়—ইন্টার মায়ামি যেন এখন শুধুই স্বপ্নের স্রোতে ভাসছে।
মন্তব্য করুন