চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লন্ডনে আধিপত্য কায়েম করতে এসেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, ফিরে যাচ্ছে একরাশ হতাশা নিয়ে। এমিরেটস স্টেডিয়ামে ডেক্লান রাইস ও মিকেল মেরিনোর দাপটে কাঁপল ইউরোপের রাজারা, আর ম্যাচের একেবারে শেষদিকে কামাভিঙ্গার বিতর্কিত লাল কার্ড যেন পুরো রিয়ালের ‘হেডলস’-এর প্রতীক হয়ে রইল। আনচেলত্তি পর্যন্ত মুখ ফিরিয়ে নিলেন—এটা শুধু হার নয়, আত্মবিশ্বাসেরও মৃত্যুও যে।
রিয়াল মাদ্রিদ যখন উত্তর লন্ডনের দিকে রওনা দিয়েছিল, তখন চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে এক পা রেখে আসার আশাই ছিল। কিন্তু ফিরছে তারা ৩-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়ে, সঙ্গে কামাভিঙ্গার হতাশাজনক কাণ্ড—স্টপেজ টাইমে অহেতুক বল লাথি মেরে দ্বিতীয় হলুদ ও লাল কার্ড, আর তাতে শেষ মুহূর্তে মাঠ ছেড়ে যেতে হয় তাকে।
কিন্তু যা চোখে পড়ে, সেটিই হয়তো সবচেয়ে বড় বার্তা—কামাভিঙ্গা যখন টানেল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, তখন তার দিকেই তাকাননি রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি। ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই মুহূর্ত। মুখ ফিরিয়ে থাকা শুধু একটি প্রতীক নয়, বরং পুরো রিয়াল শিবিরের মানসিক বিপর্যয়ের প্রকাশ।
সাবেক আর্সেনাল ডিফেন্ডার ম্যাট আপসনের ভাষায়, ‘ডিসিপ্লিন হারানো কাকে বলে—এই মুহূর্তটা তার নিখুঁত উদাহরণ। আনচেলত্তি তার খেলোয়াড়ের দিকে তাকালেন না, রেফারি যা করলেন, সেটাই একমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত।’
প্রথমার্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয় আর্সেনালের ‘রেড স্টর্ম’। ডেক্লান রাইসের দুটি অবিশ্বাস্য ফ্রি-কিক আর মিকেল মেরিনোর গোলে একে একে তিনবার বল জড়ায় রিয়াল নেটের ভেতর। মাদ্রিদ পুরোপুরি দিশেহারা হয়ে পড়ে।
ম্যাচ শেষে স্পষ্ট হতাশায় ভোগে রিয়ালের খেলোয়াড়েরা। লুকাস ভাসকেজ বলেন, ‘জটিল, নিঃসন্দেহে। তবে যদি কোনো দল এটা ঘুরিয়ে দিতে পারে, সেটা আমরাই। বার্নাব্যুয়ে আমাদের সমর্থক থাকবে, আর সেটা একদম ভিন্ন এক রাত হবে।’
রাউল আসেনসিও আরও খোলাখুলি বলেন, ‘রীতিমতো রাগে ফেটে পড়ছি। এটা আমাদের প্রত্যাশিত কিছু ছিল না। কিন্তু বিশ্বাস রাখছি, আমরা এটা ঘুরিয়ে দিতে পারব।’
তবে প্রশ্ন একটাই—আত্মবিশ্বাস যখন ভেঙে পড়ে, তখন শুধু ঘরের মাঠই কি যথেষ্ট? আর্সেনাল এখন শুধু এগিয়ে নেই, তারা মেন্টালি ম্যাচটি নিজেদের দখলে নিয়েছে। রাইস নিজেই বললেন, ‘এক পা সামনে রেখেছি ঠিক, কিন্তু কোনো আত্মতুষ্টি নেই। দ্বিতীয় লেগেও একই মনোযোগ থাকবে।’
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিয়াল ভক্তরা নিজেদের ক্ষোভ ঝাড়ছেন, কেউ বলছেন, ‘কামাভিঙ্গা লজ্জার প্রতীক’, কেউ বলছেন, ‘এই রিয়াল আর ইউরোপের রাজা নয়।’
মন্তব্য করুন