মিউনিখের আকাশে বৃষ্টি, গ্যালারিতে উত্তেজনার ঝড়—কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চে বাজিমাত করে গেল ইন্টার মিলান। হ্যারি কেইনের বায়ার্ন যতই আধিপত্য দেখাক, ততবারই ইন্টার বুঝিয়ে দিল—গোলপোস্টের সামনে সংখ্যা নয়, সাহসই শেষ কথা! ফ্রাত্তেসির শেষ মুহূর্তের নাটকীয় গোলে প্রথম লেগে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে, নিজেদের ইউরোপীয় সাম্রাজ্যের আরেকটি অধ্যায় লিখে রাখল ইতালিয়ান জায়ান্টরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখ বনাম ইন্টার মিলানের এই হাই-ভোল্টেজ লড়াইয়ে শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। ওলিসে ও কেইনের নেতৃত্বে আক্রমণাত্মক শুরু করে বায়ার্ন। ম্যাচের ২৬ মিনিটেই কেইন পেয়েছিলেন সোনালী সুযোগ, কিন্তু পোস্টে বল লেগে ফিরে আসে—যেন অদৃশ্য কারও অস্বীকৃতি ছিল সেখানেই।
অন্যদিকে, ধৈর্য আর অভিজ্ঞতা দিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে ইন্টার। ৩৮ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজ ও থুরামের যুগলবন্দিতে জালে বল জড়ায় ‘নরাযাজ্জুরি’রা। কার্লোস অগাস্তোর ক্রস থেকে থুরামের দুর্দান্ত ফ্লিক, আর মার্টিনেজের ঠান্ডা মাথার ফিনিশ—ইউরোপে এবারও যে তিনি মারাত্মক ছন্দে আছেন, বুঝিয়ে দিলেন ‘এল তোরো’।
প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় বায়ার্ন। ৮৫ মিনিটে লামাইরের পাস থেকে ভলিতে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ক্লাব কিংবদন্তি টমাস মুলার। মনে হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত ড্রই হতে চলেছে এই উত্তাল ম্যাচ।
কিন্তু নাটকের আসল পরিণতি তখনও বাকি! ৮৮ মিনিটে, একটি নিখুঁত কাউন্টার-অ্যাটাক থেকে গোল করে যান বদলি খেলোয়াড় দাভিদে ফ্রাত্তেসি। কার্লোস অগাস্তোর পাস থেকে গোল করে পুরো এলিয়েঞ্জ অ্যারেনাকে স্তব্ধ করে দেন তিনি। গোলের পর জার্সি খুলে উদযাপন করলেও, হলুদ কার্ডের পরোয়া করেননি ফ্রাত্তেসি—কারণ তিনিই তো আজকের নায়ক।
শেষ মুহূর্তে কেইনকে আটকাতে বাস্তোনির ব্লক, জালের সামনে সোমারের দুর্দান্ত সেভ আর জালের সামনে ফ্রাত্তেসির ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশ—সব মিলিয়ে একেবারে ইউরোপিয়ান ক্লাসিক রচনা করল ইন্টার।
দ্বিতীয় লেগে এখন ইন্টার খেলবে তাদের হোম গ্রাউন্ডে, যেখানে রক্ষণভাগের দুর্ভেদ্য কীর্তি আর মার্টিনেজ-থুরাম-ফ্রাত্তেসিদের আক্রমণাত্মক ছন্দে বায়ার্নের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে ঘুরে দাঁড়ানো। ইউরোপের মঞ্চে অভিজ্ঞতা আর সাহস, দুটোই আছে এই ইন্টার দলে—সুতরাং দ্বিতীয় লেগে রোমাঞ্চ আরও বাড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মন্তব্য করুন