দীর্ঘ ৬৮ দিনের টানাপোড়েন শেষে অবশেষে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো নারী ফুটবলে চলমান ‘বিদ্রোহ’। কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে অনুশীলন বর্জন করা অধিকাংশ ফুটবলার মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) সকালে তার অধীনেই মাঠে ফিরেছেন।
এক দিন আগেই ‘বিদ্রোহী’দের সঙ্গে বৈঠক করেন ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার। সেখানে পুরোনো অভিমান দূরে ঠেলে নতুন করে শুরুর আহ্বান জানান তিনি। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই আজ সকাল ৬টায় ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে অনুষ্ঠিত জাতীয় নারী দলের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তারসহ আরও অনেক সিনিয়র ফুটবলার।
এর মাধ্যমে কার্যত শেষ হলো সেই সংকট, যার শুরু হয়েছিল গত অক্টোবরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সময়। পরে জানুয়ারিতে কোচ বাটলারের চুক্তি আরও দুই বছর বাড়ানো হলে আবার চরমে ওঠে দ্বন্দ্ব। এমনকি ৩০ জানুয়ারি বাফুফে ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ১৮ জন ফুটবলার জানিয়ে দেন, বাটলারকে কোচ হিসেবে মেনে নিতে না পেরে তারা অনুশীলনে ফিরবেন না এবং প্রয়োজনে একসঙ্গে অবসর নেবেন।
তবে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাফুফে নারী কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানান, বিদ্রোহ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ওই ১৮ ফুটবলার। তারা অনুশীলনে ফিরতেও প্রস্তুত। কিন্তু ঈদের ছুটির পর শুরু হওয়া ক্যাম্পে কাউকেই দেখা যায়নি—যতক্ষণ না পর্যন্ত কোচ নিজে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
এদিকে ১৮ ফুটবলারের মধ্যে চারজন—সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া—ভুটানে ক্লাব ফুটবলে খেলতে যাওয়ায় বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। আজ যারা ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হল: শিউলি আজিম, মোসাম্মাৎ সাগরিকা, রুপনা চাকমা, শামসুন্নাহার (জুনিয়র ও সিনিয়র), সানজিদা আক্তার, কৃষ্ণা রানী, মারিয়া মান্দা, মাসুরা পারভীন, স্বর্ণা রানী, সাথী বিশ্বাস, নাসরিন আক্তার ও নিলুফা ইয়াসমিন।
তহুরা খাতুনের আজ ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ফিরে আসা শুধু অনুশীলনে নয়, বরং দেশের নারী ফুটবলের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন দেখার পালা—বাটলার-বিদ্রোহীদের নতুন এই সম্পর্ক কতটা টিকবে মাঠে ও মাঠের বাইরে।
মন্তব্য করুন