শুরুতেই ধাক্কা, তারপর উত্তেজনার ঝড়—শিলংয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে ভারত ও বাংলাদেশের মুখোমুখি লড়াই যেন এক রুদ্ধশ্বাস নাটক। ম্যাচের প্রথম বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ, কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে এখন প্রশ্ন—দ্বিতীয়ার্ধে কারা ছিনিয়ে নেবে জয়?
ম্যাচের প্রথম মিনিটেই রোমাঞ্চ! ভারতের গোলরক্ষক বিশাল কৈথের অদ্ভুত এক ভুলে বল চলে আসে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড মজিবুর রহমান জনির সামনে। মাত্র কয়েক গজ দূর থেকে শট নেন তিনি, কিন্তু তীক্ষ্ণ অ্যাঙ্গেল থেকে নেওয়া শটটি গিয়ে লাগে সাইডনেটে। মাত্র কয়েক ইঞ্চির ব্যবধানে স্বপ্নভঙ্গ! গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকরা তখনই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন।
প্রথমার্ধ জুড়ে বাংলাদেশ রক্ষণ সামলেছে দুর্দান্তভাবে। তপু বর্মন ও তারিক কাজীর নেতৃত্বে ভারতীয় আক্রমণ বারবার বাধার মুখে পড়ে। তবে ২২ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ—চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তপু, যার জায়গায় নামেন রহমত মিয়া। ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।
অন্যদিকে, মিডফিল্ডে ছন্দ খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডে খেলা অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু প্রথমার্ধে তিনি প্রায় অদৃশ্য। স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা গুছিয়ে নেওয়ার বদলে বারবার লং বল খেলতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ, যার ফলে মাঝমাঠ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
ভারতের উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো ও ফরুখ চৌধুরী বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের রক্ষণে ভীতি ছড়িয়েছেন। ৪১তম মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের ভুলে দারুণ এক সুযোগ পায় ভারত, কিন্তু গোলরক্ষক মিতুল মারমার ক্ষিপ্রতায় রক্ষা পায় বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণ প্রতিহত করে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছেন এই তরুণ গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধে গোল না এলেও ম্যাচের উত্তেজনা কোনো অংশে কম ছিল না। ভারতের রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার প্রয়োজন বাংলাদেশ দলের। রাকিব হোসেন, মোরসালিন ও জনিদের জন্য ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার দারুণ সুযোগ থাকছে।
বাংলাদেশ কি পারবে শিলংয়ের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়তে? নাকি দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেবে স্বাগতিকরা? উত্তরের জন্য চোখ রাখতে হবে পরবর্তী ৪৫ মিনিটের রোমাঞ্চে!
মন্তব্য করুন