জয়ের স্বাদটা বাংলাদেশ যেন ভুলতে বসেছে—২০০৩ সালের পর থেকে ভারতকে হারাতে পারেনি লাল-সবুজরা। অধরা জয়ের খোঁজে হ্যাভিয়ের কাবরেরা ব্রিগেড এখন শিলংয়ে। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মঙ্গলবার (সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে) ভারতের মুখোমুখী হবে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দূর্গ আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচ দেখা যাবে টি-স্পোর্টসে।
হামজা চৌধুরী এখন লাল-সবুজদের বড় অনুপ্রেরণা। ইংলিশ লিগে খেলার অভিজ্ঞতাপুষ্ট এ ফুটবলারের আজ অভিষেক হতে যাচ্ছে লাল-সবুজ জার্সিতে। এ ফুটবলারের অভিষেক রাঙাতে জয় চাচ্ছে বাংলাদেশ শিবির। ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবেরেরা বলেছেন, ‘খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ হতে চলেছে। আমরা অনুপ্রাণিত। নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা খুশি। দল হিসেবেও ভাল অবস্থায় আছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী এবং খুব কঠিন ম্যাচ প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, ভারতের কাজটা কঠিন করে তুলতে পারব।’
হামজা যেমন বাংলাদেশের প্রেরণা, ভারতের শক্তি সুনীল ছেত্রী। কিন্তু হ্যাভিয়ের কাবরেরা মনে করেন দুই ফুটবলার নয়, জিততে হলে গোটা দলকে সেরাটা দিতে হবে, ‘হামজা এবং সুনীলের ফিরে আসাটা উত্তেজনাপূর্ণ হতে চলেছে। সত্যিই খুব প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হতে চলেছে। জিততে হলে হামজা কিংবা সুনীলকে নিয়েই হবে না। দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন। আমরা যদি জিততে পারি, তবে সেটা শুধু হামজার জন্য হবে না। আমার মনে হয় সুনীলের ফিরে আসা ভারতকে শক্তিশালী করেছে।’
প্রতিপক্ষ দলের প্রতি সমীহ ছিল হ্যাভিয়ের কাবরেরার কণ্ঠে, ‘ভারতের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা নিয়ে নামছি আমরা। মানোলো (মার্কুয়েজ) এবং তার স্টাফদের প্রতি অনেক সম্মান থাকবে। আবারও বলছি, সত্যিই মনে করি আমরা এ ম্যাচের জন্য প্রস্তুত।’ এ কোচ আরও বলেন, ‘আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী যে দলটা আগের চেয়ে শক্তিশালী, অন্তত এখানে। এটি এখন পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দল। কেবল নৈপুণ্যর দিক থেকে নয়, মানসিক দিক থেকেও।’
হামজা চৌধুরীর উপস্থিতির কারণে জামাল ভূঁইয়ার ওপর থেকে স্পট-লাইট সরে গেছে বটে, তবে এখনও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ মিডফিল্ডার। ভারত ম্যাচের আগে কোন রাখ-ঢাক না রেখে পরিস্কারভাবেই জামাল ভূঁইয়া বললেন, ‘আমরা এ ম্যাচে জয় চাই।’ ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা এ ফুটবলার আরও বলেন, ‘ভারতের সাথে আমার ভালো স্মৃতি আছে। অবশ্যই, আমি এ ম্যাচের জন্য উত্তেজিত।’
ম্যাচের আগে যে হাইপ তৈরি হয়েছে, এটা না দলের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়! এ প্রসঙ্গে জামাল ভূঁইয়া বললেন, ‘ভারতে বিপক্ষে ম্যাচের আগে এবং পরে আপনি দর্শকদের চাপ অনুভব করবেন। কিন্তু খেলার সময় আমাদের মাঠের দিকেই মনোযোগ থাকে। দর্শক কী বলছে বা চিৎকার করছে—সেদিকে মনোযোগ থাকে না।’
মাঠের বাইরের চিত্র যাই থাকুক, নব্বই মিনিটের লড়াইয়ে এখন ভারতকে এগিয়ে রাখছেন জামাল ভূঁইয়া, ‘আমি এখনও মনে করি, দুই দলের মাঝে একটা ব্যবধান আছে। আইএসএল কিন্তু বিপিএলের চেয়ে ভালো। স্থানীয় বাংলাদেশি এবং ভারতীয়দের মধ্যে মানের দিক থেকে, আমি মনে করি না তেমন বড় কোনো পার্থক্য আছে।’
এ মিডফিল্ডার যোগ করেন, ‘হামজার অন্তর্ভুক্তি ইতিবাচক দিক। স্থানীয় খেলোয়াড়রাও উন্নতি করেছেন। সর্বোপরি মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। এ কোচ আসার পর আমরা যেভাবে খেলছি, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়েছে এবং খেলোয়াড়রা এখন সম্ভবত দুই বছর আগের সাফের চেয়ে বেশি প্রস্তুত। তাই আমরা বলছি এটা একটা খুব শক্তিশালী দল।’
মন্তব্য করুন