কোচ বয়কটের ডাক দিয়ে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলার থাকছেন না নিশ্চিত ছিল। পিটার বাটলারের দল ঘোষণার মাধ্যমে সেটা আনুষ্ঠানিকতা পেল। প্রশ্ন হচ্ছে, সম্পূর্ণ বদলে যাওয়া একটা দল নিয়ে কেমন করবে বাংলাদেশ!
প্রথমত, লাল-সবুজরা যাচ্ছে ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে। প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আছে বটে, দলটি কিন্তু বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। র্যাঙ্কিংয়ে আরব আমিরাত আছে ১১৬ নম্বরে, বাংলাদেশ ১৩২-এ। সফরে দুই ম্যাচ খেললেও একটি অফিসিয়াল, আরেকটি হবে আন-অফিসিয়াল। ২৬ ফেব্রুয়ারি ম্যাচটি হবে ফিফা স্বীকৃত। ২ মার্চ খেলা ম্যাচটা ফিফা উইন্ডোর বাইরে থাকায় স্ট্যাটাস হিসেবে লেখা থাকবে আন-অফিসিয়াল। সে হিসেবে এ সফরটা বাংলাদেশের জন্য নিজেদের পরখ করে নেওয়ার মঞ্চ।
সিনিয়রদের বাইরে রেখে একঝাঁক উদীয়মানকে নিয়ে দল সাজিয়েছেন ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। দুটি সাফ জয়ী দলের একাধিক সদস্য ফর্ম এবং বয়স বিবেচনায় ৫৮ বছর বয়সী এ কোচের পরিকল্পনার বাইরে ছিলেন। এ কারণে দায়িত্ব গ্রহণের পর উদীয়মানদের ওপরই আস্থা রাখতে দেখা গেছে পিটার বাটলারকে। সিনিয়রদের সঙ্গে জটিলতার সূত্রপাত এ জায়গা থেকেই।
আরব আমিরাত সফরের স্কোয়াডে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারকে না রাখলেও তাদের সবাইকে অবশ্য ছুড়ে ফেলার সুযোগ নেই। বাটলারও সেটা চান না। বরং ১৮ জনের তালিকায় থাকা একাধিক ফুটবলারকে নিজের পরিকল্পনায় ভালোভাবেই রেখেছেন ২০২৪ সালে দ্বিতীয় সাফ শিরোপা জয়ী এ কোচ। আরব আমিরাত সফরে নৈপুণ্যে দেখানো ফুটবলারদের সঙ্গে পরিকল্পনায় থাকা সিনিয়রদের নিয়ে শক্তিশালী দল গড়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দলের সব পজিশনে যোগ্য বিকল্প গড়ে উঠেছে, বিভিন্ন ম্যাচে তার পরীক্ষাও দিয়েছেন উদীয়মানরা। রক্ষণে আফিদা খন্দকার-কোহাতি কিসকু, মাঝমাঠে স্বপ্না রানী-মুনকি আক্তার, আক্রমণভাগে মোসাম্মাদ সাগরিকা-আকলিমা খাতুনদের ওপর আস্থা রাখা যায়। কিন্তু গোলবারের নিচে রুপনা চাকমার জায়গায় ইয়ারজান বেগম কেমন করবেন—এ নিয়ে কৌতূহল কাজ করছে। যদিও ২০২৪ সালের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের তিন পেনাল্টি রুখে দিয়েছিলেন এ ইয়ারজান।
উদীয়মানদের নিয়ে ভুল করার শঙ্কা আছে, আছে ভুল শুধরে নিখুঁত হওয়ার সুযোগ। এ কারণে নতুন দল নিয়ে ইতিবাচক থাকতে চান পিটার বাটলার, ‘স্কোয়াডে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, বাকিরা উদীয়মান। তারা শিখতে শুরু করেছে। উদীয়মানদের আরও সময় দিতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে। জানি তারা ভুল করবে, আমরা সবাই ভুল করি। ভুল না করলে তো শেখা যায় না।’
পিটার বাটলার আরও বলেন, ‘আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো মেয়েরা যেখানেই যাক, নম্রতা-ভদ্রতার সঙ্গে কঠিন পরিশ্রম করবে এবং নিজেদের সেরাটা দিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে।’
বাংলাদেশ স্কোয়াড
গোলরক্ষক: মোসাম্মৎ ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার ও মেঘলা রানী রায়।
রক্ষণভাগ: কোহাতি কিসকু, জয়নব বিবি রিতা, আফিদা খন্দকার, সুরমা জান্নাত, সুলতানা, কানম আক্তার, মরিয়ম বিনতে হান্না ও অর্পিতা বিশ্বাস অর্পিতা।
মিডফিল্ডার: হালিমা আক্তার, স্বপ্না রানী, মুনকি আক্তার ও বন্যা খাতুন।
আক্রমণভাগ: আইরিন খাতুন, আকলিমা খাতুন, শাহেদা আক্তার রিপা, অয়ন্ত বালা মাহাতো, ঐশি খাতুন, তনিমা বিশ্বাস, সুরভী আকন্দ প্রীতি ও নবিরন খাতুন।
মন্তব্য করুন