ম্যানচেস্টার সিটির মাঠ, হাজারো গর্জন, আর এক ব্যানার—যা যেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ভেতরের আগুন আরও উসকে দিল। ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে রদ্রির হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার ব্যঙ্গাত্মক ইঙ্গিত করা সেই ব্যানার দেখেই যেন নতুন এক মিশনে নেমেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা। ফলাফল? ইতিহাদে রীতিমতো ম্যানচেস্টার সিটিকে স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নিলেন ভিনিসিয়ুস!
মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে-অফ প্রথম লেগে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-২ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে জুড বেলিংহামের গোল করিয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে যান ভিনিসিয়ুস। আর ম্যাচ শেষে জানালেন—সিটির ব্যানারই তাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছিল!
সিটি সমর্থকদের ব্যানারে লেখা ছিল জনপ্রিয় ব্রিটিশ ব্যান্ড ‘ওয়েসিস’-এর গান ‘Stop Crying Your Heart Out,’ যা ইঙ্গিত করছিল গত বছর ব্যালন ডি'অর না পাওয়ার পর ভিনিসিয়ুসের হতাশার দিকে। সেই ব্যানারে দেখা যায় রদ্রির হাতে সেই সম্মানজনক ট্রফি, যা শেষ পর্যন্ত ম্যান সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডারই জিতেছিলেন।
কিন্তু ভিনিসিয়ুসকে দমিয়ে রাখার বদলে সেটাই যেন তাকে আরও উজ্জীবিত করল। ম্যাচ শেষে মোভিস্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন—
‘আমি ব্যানারটা দেখেছি। তবে যখন প্রতিপক্ষ সমর্থকরা এমন কিছু করে, তখন সেটা আমাকে আরও শক্তি জোগায়, আরও ভালো খেলার জন্য উজ্জীবিত করে। আর আজ আমি সেটাই করেছি।’
রিয়াল মাদ্রিদ গত বছর ব্যালন ডি'অরের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি, কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল যে ভিনিসিয়ুস এই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। ফলে সেই বিতর্ক নতুন করে উসকে দিল ম্যান সিটির এই ব্যানার।
রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি ম্যাচ শেষে জানান যে তিনি নিশ্চিত নন, ভিনিসিয়ুস মাঠে নামার আগেই ব্যানারটি দেখেছিলেন কিনা। তবে ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখে তার সন্দেহ নেই যে এটি তাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছিল।
‘আমি জানি না ভিনিসিয়ুস ব্যানারটি দেখেছিল কিনা, কিন্তু ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখে যদি বলি—সে যদি দেখে থাকে, তাহলে সেটা ওর জন্য বড় অনুপ্রেরণা হয়েছে!’
অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা ব্যানারটি দেখেননি বলে জানান, তবে তিনি স্বীকার করেন যে ভিনিসিয়ুস এক ‘অসাধারণ খেলোয়াড়’।
এই জয়ের ফলে দুই লেগের লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ কিছুটা এগিয়ে গেল। তবে আনচেলত্তি মনে করিয়ে দিলেন, আসল চ্যালেঞ্জ এখনো বাকি—সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হতে যাচ্ছে শেষ যুদ্ধ। ‘এই জয় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু লড়াই এখনো শেষ হয়নি। এখন আসল পরীক্ষা হবে বার্নাব্যুতে।’
তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় লেগে রিয়ালের গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার অ্যান্টোনিও রুডিগার ও ডেভিড আলাবা দলে ফিরতে পারেন, যা রিয়ালের রক্ষণভাগকে আরও শক্তিশালী করবে।
গতবার পুরস্কার হাতছাড়া হলেও, ভিনিসিয়ুস এই মৌসুমে যে পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন, তাতে ব্যালন ডি'অরের লড়াইয়ে তিনি নিজেকে আবারও প্রমাণ করছেন। এই ফর্ম বজায় থাকলে, আগামী বছর কি তাহলে তার হাতে উঠবে সেই স্বপ্নের ট্রফি? ফুটবল বিশ্ব অপেক্ষায় থাকল!
মন্তব্য করুন