রিয়াল মাদ্রিদ যখন চ্যাম্পিয়নস লিগের মঞ্চে নামে, তখন প্রত্যাশার পারদ সবসময় ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু মঙ্গলবারের রাতটি ছিল বিশেষ কিছু। ইতিহাদ স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে পরিবেশে যখন ম্যাচটি নাটকীয়তায় মোড় নিচ্ছিল, তখনই ফুটবল বিশ্বের এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্ম দিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অ্যাসিস্টের মাধ্যমে জুড বেলিংহামের গোল তৈরি করে দিলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। আর তাতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে লিওনেল মেসির ১২টি অ্যাসিস্টের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি!
এই কীর্তি গড়তে মেসির চেয়ে ৫০টি কম ম্যাচ খেলেছেন ভিনিসিয়ুস। অথচ কিছু বছর আগেও তিনি ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের এক সম্ভাবনাময় তারকা, যার ওপর অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। আজ তিনি শুধুই একজন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় নন- তিনি ইতিহাস গড়ার নায়ক।
রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যে এই হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল পেপ গার্দিওলার দল। ১৯ মিনিটে আর্লিং হলান্ডের গোলে সিটি এগিয়ে যায়। তবে ৬০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোল ফের সমতা আনে। ৮০ মিনিটে আবারও সিটিকে এগিয়ে দেন হলান্ড।
কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ মানেই শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত লড়াই! ৮৬ মিনিটে ব্রাহিম দিয়াজ গোল করে দলকে ম্যাচে ফেরান। এরপর ম্যাচ যখন ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে, তখনই ভিনিসিয়ুসের সেই জাদুকরি মুহূর্ত। প্রতিপক্ষ রক্ষণের ফাঁক গলে বল এগিয়ে দেন তিনি, যা প্রথমে বাইরে চলে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ঠিক সময়ে ছুটে এসে জুড বেলিংহাম তা গোলে পরিণত করেন।
এই গোলে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি ভিনিসিয়ুস নিজের নাম তুললেন ইতিহাসের খাতায়- চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের তালিকায় এখন দ্বিতীয় তিনি!
যদিও ভিনিসিয়ুস এখন নকআউট পর্বে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের মালিক, তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের সামগ্রিক রেকর্ডে তিনি এখনও পেছনে। লিওনেল মেসি তার ক্যারিয়ারে ৪০টি অ্যাসিস্ট করেছেন, যা সর্বকালের তালিকায় তৃতীয়। ৪১ অ্যাসিস্ট নিয়ে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া দ্বিতীয় স্থানে, আর ৪২ অ্যাসিস্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
ভিনিসিয়ুস কি পারবেন এই কিংবদন্তিদের ছাড়িয়ে যেতে? সময়ই বলে দেবে। তবে তার বর্তমান ফর্ম দেখে একটা ব্যাপার স্পষ্ট- তিনি যে শুধুই বর্তমান নন, ভবিষ্যতেরও রাজা হতে চলেছেন!
মন্তব্য করুন