যেন সিনেমার চিত্রনাট্য! প্যারিসের পার্ক দে প্রিন্সেসে এমন এক নাটকীয় ম্যাচ দেখল ফুটবল বিশ্ব, যেখানে শুরুতে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত বিধ্বস্ত হতে হলো ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি) ৪-২ গোলের জয় তুলে নিয়ে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল, আর পেপ গার্দিওলার সিটি দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় পড়ে গেল।
প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাল্টে যায় ম্যাচের গতিপথ। জ্যাক গ্রিলিশ ও আর্লিং হলান্ডের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সিটি। কিন্তু এরপরই যেন তীব্র ঝড় তোলে পিএসজি। ওসমান দেম্বেলে ও ব্রাডলি বারকোলা মুহূর্তের মধ্যে সমতা ফেরান। এরপর জোয়াও নেভেসের দারুণ হেড আর গঞ্জালো রামোসের শেষ মুহূর্তের গোল নিশ্চিত করে সিটির দুঃস্বপ্নের রাত।
পেপ গার্দিওলার জন্য এটি ছিল এক হতাশাজনক রাত। বৃষ্টিতে ভিজে হতাশ মুখে সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে তিনি দেখলেন তার দল কীভাবে ছিটকে গেল। সিটির রক্ষণভাগের দুর্বলতা পুরো ম্যাচেই প্রকট ছিল। ম্যাচের প্রথমার্ধেই তারা সৌভাগ্যবান ছিল, যখন নেভেস ফাঁকা পোস্টে বল পাঠাতে ব্যর্থ হন, আর ফ্যাবিয়ান রুইজের শট গোললাইন থেকে ফেরান জোসকো গাভার্দিওল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আশা জাগিয়েছিল গ্রিলিশ ও হলান্ডের লক্ষ্যভেদ। কিন্তু পুরনো দুর্বলতা ফের ফিরে এলো। পিএসজির গতি ও আক্রমণাত্মক খেলার সামনে সিটির রক্ষণভাগ কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পিএসজি ধাপে ধাপে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং প্রতিপক্ষকে পুরোপুরি ছাপিয়ে যায়।
সিটির দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে দেম্বেলে, বারকোলা, নেভেস ও রামোসের অসাধারণ পারফরম্যান্সে জয় ছিনিয়ে নেয় পিএসজি। ৫৬তম মিনিটে দেম্বেলের গোলের মাধ্যমে শুরু হওয়া পিএসজির প্রত্যাবর্তন বারকোলার গোলে পূর্ণতা পায়। এরপর ৭৮তম মিনিটে নেভেসের হেড ও অতিরিক্ত সময়ে রামোসের গোল সিটির সমাপ্তি টেনে দেয়।
এই পরাজয়ের পর গ্রুপের ২৫তম স্থানে থাকা সিটির সামনে কঠিন সমীকরণ। পরবর্তী ম্যাচে ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে জয় পেতে ব্যর্থ হলে বিদায় নিশ্চিত।
অন্যদিকে, পিএসজির জন্য এই জয় শুধু আত্মবিশ্বাস বাড়ায়নি, বরং পরবর্তী ধাপে ওঠার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করেছে। তাদের আক্রমণভাগের ধার, বিশেষ করে দেম্বেলে ও বারকোলার পারফরম্যান্স, প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
মন্তব্য করুন