৩৬ দলের নতুন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফরম্যাট নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। বিরতির পর মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) শেষ দুই রাউন্ডের লড়াইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বড় দলগুলো পড়েছে চাপে। কারা পাবে সরাসরি রাউন্ড অফ ১৬-এ জায়গা, আর কারা পড়বে প্লে-অফের চ্যালেঞ্জে? ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায়, কারণ এবার ফরম্যাটের নতুন নিয়মে সব কিছুই হয়ে উঠেছে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
নতুন ফরম্যাটের কাঠামো:
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগ পর্বে ৩৬টি দল একক টেবিলে খেলেছে, যেখানে প্রতিটি দল খেলেছে ৮টি করে ম্যাচ। এই ফরম্যাটের নিয়ম অনুযায়ী:
- শীর্ষ ৮ দল: সরাসরি রাউন্ড অফ ১৬-তে যাবে।
- ৯ থেকে ২৪তম স্থানে থাকা দল: প্লে-অফ রাউন্ডে লড়বে, যার বিজয়ীরা রাউন্ড অফ ১৬-তে প্রবেশ করবে।
- ২৫ থেকে ৩৬তম স্থান: এই দলগুলো বাদ পড়বে।
তালিকার অবস্থানের গুরুত্ব:
লিগ টেবিলের অবস্থান এবার আরও গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নকআউট পর্বের প্রতিপক্ষ নির্ধারণ হবে তালিকার ভিত্তিতে।
- শীর্ষস্থানীয় দলগুলো (১ম ও ২য়) ১৫ থেকে ১৮তম স্থানে থাকা দলের মুখোমুখি হবে। যাতে শীর্ষ দল বাদ না পড়ে যায়
- এছাড়া শীর্ষ ৮ দল একে অপরের মুখোমুখি হতে পারবে না সেমিফাইনালের আগে।
বর্তমানে লিভারপুল ও বার্সেলোনা প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, যার ফলে তারা শুধুমাত্র ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হতে পারে। অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ এবং পিএসজির মতো বড় দলগুলো তাদের বর্তমান অবস্থানের (২০ থেকে ২২তম) কারণে শীর্ষ দলগুলোর জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টাইব্রেকার নিয়ম:
সমান পয়েন্ট হলে নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করা হবে:
১. গোল পার্থক্য
২. মোট গোল সংখ্যা
৩. অ্যাওয়ে গোল সংখ্যা
৪. ম্যাচ জয়ের সংখ্যা
৫. অ্যাওয়ে জয়ের সংখ্যা
৬. প্রতিপক্ষের পয়েন্ট সংগ্রহের গড়
৭. ডিসিপ্লিনারি পয়েন্ট
৮. ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতার র্যাঙ্কিং (UEFA coefficient)।
বড় দলগুলোর বিপদ:
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কয়েকটি বড় দলের অবস্থা নাজুক। ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ এবং পিএসজির মতো দলগুলো নিজেদের সাধারণ মানদণ্ড অনুযায়ী ভালো পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়েছে। যদি তারা প্লে-অফ রাউন্ডে পড়ে, তাহলে শীর্ষ ৮ দলগুলোর জন্য নকআউট পর্ব আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে।
বর্তমান লিগ টেবিল: শীর্ষ দল ও সম্ভাব্য নায়করা
লিভারপুল (১৮ পয়েন্ট): এক নম্বর অবস্থানে থেকে লিলের বিপক্ষে জয় বা ড্র তাদের শীর্ষ আট নিশ্চিত করবে।
বার্সেলোনা (১৫ পয়েন্ট): বেনফিকার বিপক্ষে একটি জয় তাদেরও সরাসরি রাউন্ড অব ১৬-এ নিয়ে যাবে।
আর্সেনাল ও বায়ার লেভারকুসেন (১৩ পয়েন্ট): শীর্ষ আটে থাকার দৌড়ে।
বড় ক্লাবগুলোর সংকট
এ মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজি, এবং রিয়াল মাদ্রিদের মতো শীর্ষ ক্লাবগুলো প্রত্যাশার নিচে পারফর্ম করেছে।
ম্যানচেস্টার সিটি: পিএসজির বিপক্ষে জয় প্রয়োজন।
রিয়াল মাদ্রিদ: সলজবুর্গের বিপক্ষে নির্ধারক ম্যাচ।
পিএসজি: স্টুটগার্টের বিপক্ষে ম্যাচ কার্যত বাঁচা-মরার লড়াই।
বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা দল
২৭-৩৬তম স্থানে থাকা দলগুলোর জন্য এটি কার্যত বিদায় ঘণ্টা। শাখতার দোনেৎস্ক এবং স্পার্টা প্রাগ এখনও সুযোগ ধরে রেখেছে, কিন্তু তাদের পারফরম্যান্সে উন্নতি আনতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচি
নকআউট প্লে-অফ ড্র: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫।
প্লে-অফ প্রথম লেগ: ১১-১২ ফেব্রুয়ারি।
দ্বিতীয় লেগ: ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি।
শেষ দুই রাউন্ডের ম্যাচগুলো শুধুমাত্র নকআউট পর্বের দল নির্বাচনই করবে না, বরং নতুন ফরম্যাটে বড় দলগুলোর ভাগ্যও নির্ধারণ করবে। ফুটবলপ্রেমীরা এখন তাকিয়ে শেষ রাউন্ডের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ের দিকে। ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের এই নতুন অধ্যায়ে প্রতিটি মুহূর্ত রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে।
মন্তব্য করুন