কিলিয়ান এমবাপ্পে—একটি নাম, যা ফুটবলের সঙ্গে জাদুর মিশেল। লাস পালমাসের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে নিজের প্রতিভার আরেকটি উদাহরণ দিলেন এই ফরাসি তারকা। দুই গোলের পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন খেলা উপহার দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদকে লা লিগার শীর্ষে তুলে আনলেন তিনি। এমন পারফরম্যান্সের পর প্রশংসায় ভাসালেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি, যিনি এমবাপ্পেকে আখ্যা দিলেন ‘বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার’ হিসেবে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই লাস পালমাসের ফাবিও সিলভার গোলে স্তব্ধ হয়েছিল রিয়াল সমর্থকরা। মাত্র ২৮ সেকেন্ডে পাওয়া সেই গোলটি ছিল লা লিগার ইতিহাসে রিয়ালের বিপক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি।
রদ্রিগোকে ফাউল করার জন্য পেনাল্টি পায় রিয়াল, যা থেকে গোল করে সমতা ফেরান এমবাপ্পে। এরপর ব্রাহিম দিয়াজের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। তিন মিনিট পর দ্বিতীয় গোলটি করেন এমবাপ্পে, যিনি পুরো ম্যাচ জুড়ে ছিলেন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক। দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগোর চমৎকার এক গোলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-১।
লাস পালমাসের বিপক্ষে দুই গোল করে এমবাপ্পে ক্লাব ক্যারিয়ারে ৩০০ গোলের মাইলফলক পেরিয়ে যান। এর মধ্যে ১৮টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, ২৭টি মোনাকোর হয়ে, এবং পিএসজির হয়ে করেছেন ২৫৬ গোল। তবে সংখ্যার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার মাঠে উপস্থিতি। তিনি শুধু গোল করেননি; প্রতিপক্ষের বক্সে সর্বোচ্চ ১২টি টাচ এবং ৫টি সুযোগ তৈরি করে মাঠ মাতিয়েছেন।
কোচ কার্লো আনচেলত্তি এমবাপ্পের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘সে বিশ্বের সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড। তার গতি ও কৌশলগত দৌড় যখন সেন্টার পজিশনে ব্যবহার করা হয়, তখন তা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ানক হয়ে ওঠে।’
বার্সেলোনার বিপক্ষে সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ গোলে হার এবং কোপা দেল রের ম্যাচে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে জয় এনে দিতে দলকে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছিল। এমনকি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দর্শকদের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে দুয়োধ্বনি। তবে এই জয়ে রিয়াল সেই হতাশার জবাব দিয়েছে।
অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের লেগানেসের কাছে হারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিয়াল লা লিগার শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করে। আনচেলত্তি বলেন, ‘সমালোচনা আমাদের জন্য একটা জাগরণ ছিল। এটা দুঃখজনক, কিন্তু অনুপ্রেরণাও দেয়। কঠিন সময়ে দল যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট।’
রিয়াল মাদ্রিদ আবারও শীর্ষে, আর কিলিয়ান এমবাপ্পে প্রমাণ করলেন, কেন তাকে আধুনিক ফুটবলের সেরা তারকাদের একজন বলা হয়।
মন্তব্য করুন