তাহলে কি অবশেষে জিনেদিন জিদানের ভাগ্য খুলছে? রিয়াল মাদ্রিদ ও ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদান রিয়াল মাদ্রিদের কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকেই তিনি নিজ দেশের কোচ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। সেই অপেক্ষা অবশেষ শেষ হচ্ছে মনে হয়।
ফ্রান্স জাতীয় দলের সফলতম কোচ দিদিয়ের দেশম ২০২৬ বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব ছাড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইএসপিএন জানায় তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চলবে, এবং ফ্রান্স যদি মূল পর্বে জায়গা করে নেয়, তবে তিনি বিশ্বকাপের পর সরে দাঁড়াবেন। তবে দল যদি বাছাই পর্বে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই পর্ব শেষ হওয়ার পরই তার অধ্যায়ের ইতি ঘটবে।
৫২ বছর বয়সী কিংবদন্তি ফুটবলার ও সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান দেশমের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী এই ফরাসি কোচ জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলেন এবং এবার তার সুযোগ আসতে পারে।
২০১২ সালে লরাঁ ব্লাঁর জায়গায় দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশম ফ্রান্সকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেন। তার অধীনে দল ২০১৮ বিশ্বকাপ ও ২০২১ নেশন্স লিগ জিতেছে, পাশাপাশি ২০১৬ ইউরো ও ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে এবং ২০২৪ ইউরোর সেমিফাইনালে পৌঁছেছে।
তিনি ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচ, যার জয়ের হার ৬৪.২%। শুধু তাই নয়, শেষ চারটি বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেই তিনি দলকে অন্তত সেমিফাইনালে তুলেছেন, যা তাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা জাতীয় দল কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
দেশম এমন এক বিরল কীর্তি অর্জন করেছেন, যা ইতিহাসে খুব কম জনের আছে। তিনি ১৯৯৮ সালে খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন এবং ২০১৮ সালে কোচ হিসেবে সেই সাফল্য পুনরাবৃত্তি করেছেন। এই কীর্তিতে তিনি জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও ব্রাজিলের মারিও জাগালোর পাশে জায়গা করে নিয়েছেন।
ফ্রান্স বর্তমানে নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে আছে, যেখানে তারা মার্চে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে। এরপর দল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ পর্বের জন্য অপেক্ষা করবে।
দেশম আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেন ‘আমার কাছে জিনিসটি পরিষ্কার, ২০২৬ সালে ফরাসি দলের সাথে আমার অধ্যায় শেষ হবে।’
দেশম আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘ সময় ধরে ফ্রান্স দলের সঙ্গে আছি, একই আবেগ ও উদ্দীপনা নিয়ে দলকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একসময় থামতে হয়। জীবনে অন্য কিছু করার সময় আসে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ফ্রান্স যেন অনেক বছর ধরেই যেমন সেরা অবস্থানে আছে, তেমনই থাকতে পারে।’
মন্তব্য করুন