আর্জেন্টিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভার প্লেট নারী দলের কয়েকজন খেলোয়াড় ব্রাজিলে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে । এই ঘটনাটি পুরো বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে। সোমবার আটক খেলোয়াড়দের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য হেবিয়াস করপাস (মুক্তির আবেদন) আদালতে দাখিল করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
গেমিওর বিপক্ষে লেডিস কাপ ম্যাচে রিভার প্লেটের খেলোয়াড় ক্যান্ডেলা দিয়াজের বর্ণবাদী ইঙ্গিত ভিডিওতে ধরা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে দিয়াজসহ আরও তিন খেলোয়াড় – ক্যামিলা দুয়ার্তে, জানা ক্যাঙ্গারো এবং মিলাগ্রোস দিয়াজকে সাও পাওলোর একটি থানায় আটক করা হয়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। ক্যান্ডেলা দিয়াজের ঘটনাটি সবচেয়ে গুরুতর বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ তার ভিডিওটি স্পষ্টভাবে তার ইঙ্গিতকে তুলে ধরে।
সাও পাওলোর আইনজীবী থায়িস সানকারির নেতৃত্বে একটি হেবিয়াস করপাস আবেদন দাখিলের প্রস্তুতি চলছে। এটি এমন একটি আইনি ব্যবস্থা, যা কোনো ব্যক্তির অবৈধভাবে আটক হওয়ার ক্ষেত্রে তার মুক্তি নিশ্চিত করে। তবে, ব্রাজিলে বর্ণবাদী অপরাধ অত্যন্ত গুরুতরভাবে নেওয়া হয় এবং আদালত শুনানির তারিখ চূড়ান্ত না করা পর্যন্ত কোনো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত আশা করা যাচ্ছে না।
রিভার প্লেট ক্লাব এক বিবৃতিতে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং জড়িত খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ক্লাবটি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই ঘটনার ফলে ম্যাচটি ১-১ সমতায় শেষ হলেও, গেমিও ৩-০ ফলাফলে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি, রিভার প্লেটকে লেডিস কাপে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা ক্লাবের ভাবমূর্তিতে বড় ধরনের আঘাত হেনেছে।
আটক খেলোয়াড়রা নিজেদের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং চরম মানসিক চাপে রয়েছেন। তাদের সতীর্থরা ইতোমধ্যে বুয়েনস আয়ার্সে ফিরে গেছেন। আদালতের সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে তারা বড়দিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন কি না, নাকি মামলাটি আরও দীর্ঘায়িত হবে।
এই ঘটনা ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার ক্রীড়াঙ্গনে বর্ণবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
মন্তব্য করুন