ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা মেনে নিয়েছেন যে তার দলের সাম্প্রতিক বাজে পারফরম্যান্সের জন্য তিনিই দায়ী। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারের পর সিটির জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। গত ১১ ম্যাচের মধ্যে এটি তাদের ৮ম পরাজয়, যা সিটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।
ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি ও আমাদ দিয়ালোর গোলে জয় তুলে নেয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। হারের পর গার্দিওলা বলেন, ‘আমি কোচ হিসেবে যথেষ্ট ভালো নই। আমাকে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এটাই সত্য।’
গার্দিওলার এই মন্তব্য দলের ভেতরকার চাপ ও হতাশারই প্রতিফলন। মাত্র এক মাস আগে তিনি ম্যান সিটির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি নবায়ন করেছিলেন। কিন্তু এই ধারাবাহিক ব্যর্থতা তাদের শিরোপা ধরে রাখার আশা ক্রমেই ফিকে করে দিচ্ছে। লিগ টেবিলে সিটি এখন পঞ্চম স্থানে, লিভারপুলের চেয়ে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। এরচেয়েও চিন্তার বিষয়, লিভারপুলের একটি ম্যাচ কম খেলা হয়েছে।
পরাজয়ের পর দলের খেলোয়াড়দের হতাশাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মিডফিল্ডার ফিল ফোডেন ম্যাচের পর বিবিসিকে বলেন, ‘এটা যেন যুব দলের রক্ষণভাগ ছিল। আমরা বারবার একই ভুল করছি। ম্যাচের শেষ দিকে একদম অগোছালো হয়ে পড়ি।’
বার্নাদো সিলভার ভাষায়, ‘আমরা শেষ মুহূর্তে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের মতো খেলেছি। এটি কেবল দুর্ভাগ্য নয়। গত কয়েকটি ম্যাচেও একই চিত্র দেখা গেছে। আমাদের নিজেদের দিকে তাকাতে হবে।’
ফোডেন ও সিলভার এই সমালোচনা বোঝাচ্ছে যে সিটির ডিফেন্সে সমস্যার গভীরতা দিন দিন বাড়ছে।
সিটির জন্য এটি ২০০৩ সালের পর সবচেয়ে বাজে সময়। সেই বছর টানা ১৮ ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র একটিতে জিতেছিল। বর্তমান সময়ের এই ধারা তাদের শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে দেয়ার হুমকি তৈরি করছে। সিটির ডিফেন্সের দুর্বলতা এবং ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মনোযোগ হারানো এই অবনতির প্রধান কারণ। এদিকে আক্রমণভাগেও আর আক্রমণের ধার নেই।
গার্দিওলা জানিয়েছেন, ‘কিছু একটা ঠিক নেই। আমরা আমাদের সেরা খেলা খেলতে পারছি না। পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে এবং আমি এখনো এর সমাধান খুঁজে পাইনি।’
আগামী ম্যাচে সিটির প্রতিপক্ষ অ্যাস্টন ভিলা। এই ম্যাচে জয় পাওয়া গার্দিওলার দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ধরে রাখতে হলে এখন থেকেই জয়ের ধারায় ফিরতে হবে।
ম্যানচেস্টার সিটির বর্তমান পরিস্থিতি গার্দিওলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি কি আবারও তার জাদুকরী কৌশল দিয়ে দলকে জয়ের রাস্তায় ফেরাতে পারবেন? নাকি এই মৌসুমে তার সাফল্যের গল্প ভিন্ন মোড় নেবে?ৃ
মন্তব্য করুন