রিয়াল মাদ্রিদকে ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্ব প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে লিভারপুল। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে তারা। ১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের ১০ মার্চ রিয়ালকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল লিভারপুল। এরপর আট ম্যাচ জয়হীন ছিল অল রেডরা। যার মধ্যে সাত ম্যাচে হার। এক ম্যাচ ড্র হয়। ১৫ বছর পর বুধবার রাতে আবার জিতেছে লিভারপুল। উচ্ছ্বসিতও তারা। অন্যদিকে পেনাল্টি মিস করে হতাশ কিলিয়ান এমবাপ্পে।
পেনাল্টি মিস করা এমবাপ্পেকে সান্ত্বনা দিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। লিভারপুলের মোহামেদ সালাহও পেনাল্টি মিস করেছেন, তবে তা নিয়ে কেউ হতাশ নন। বরং লিভাপুল শিবিরে খুশির বন্যা। অ্যানফিল্ডে জয়ের পর অল রেড কোচ আর্নে স্লট বলেছেন, ‘আপনারা জানেন অনেকবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা দলটির বিপক্ষে খেলা কতটা স্পেশাল। অনেক বছর ধরে লিভারপুলের জন্য তারা একটা কষ্টের কারণও ছিল। যে কোনো ম্যাচ জিততে পারাই দারুণ ব্যাপার, বিশেষ করে এমন বড় ম্যাচ। কারণ, এখানে আপনি মানসম্পন্ন অনেক খেলোয়াড়ের মুখোমুখি হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন সংস্করণে আমরা কেবল পাঁচ ম্যাচ খেলেছি। এখন যেখানে আছি, সেখানে থাকতে পেরে আমরা খুশি, কিন্তু আমরা পা মাটিতেই রাখছি।’
লিভারপুলের হয়ে প্রথম গোল করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার। তিনি বলেছেন, ‘দারুণ ব্যাপার, তবে একই সঙ্গে এর বিশেষ কোনো মূল্য নেই। কারণ এটা কেবলই প্রথম ধাপ। নিজেদের পারফরম্যান্সে আমরা খুশি, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা এগিয়ে যাব।’
রিয়ালের বিপক্ষে প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটের মাথায় গোল করেন লিভারপুলের অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। এরপর রিয়াল মাদ্রিদ ৫৯ মিনিটের মাথায় বক্সে ভাসকুয়েসকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায়। কিন্তু গোল করতে পারেননি এমবাপ্পে। ৭০ মিনিটে পেনাল্টি পায় লিভারপুল। সালাহ গোল করতে ব্যর্থ হন। ৭৬ মিনিটে দারুণ গোল করেন কডি গ্যাকপো। ২-০তে ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। হারের পর পাঁচ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ২৪ নম্বরে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নিয়মে পয়েন্ট তালিকার প্রথম আটটি দল সরাসরি শেষ ষোলোয় যাবে।
৯ থেকে ২৪ নম্বরে থাকা দলের মধ্যে আবার খেলার পর আটটি দল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। রিয়াল যে খুব স্বস্তির জায়গায় নেই, সেটা বুঝতে পারছেন আনচেলত্তি। তিনি এমবাপ্পের পেনাল্টি মিস নিয়ে বলেন, ‘তার জন্য এটা কঠিন সময়। তাকে আমাদের সমর্থন দিতে হবে এবং ভালোবাসা দিতে হবে। দ্রুতই সে ছন্দ ফিরে পাবে। হতে পারে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। কখনো কখনো এমন সময় আসে, যখন কোনো কিছু পক্ষে থাকে না। তবে সেই সময় পেরিয়ে যাওয়া যায়। অনেকে পেনাল্টিতে ব্যর্থ হয়, এটা অনেক সময়ই ঘটে। এর জন্য তাকে খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে না।’
এমবাপ্পের পক্ষে দাঁড়িয়ে রিয়াল কোচ আরও বলেন, ‘সে কঠোর পরিশ্রম করে। এভাবেই কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে তাকে। এই মুহূর্তে কোনো কিছু তার পক্ষে যাচ্ছে না। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়।’
বেলিংহামও প্রশংসা করেছেন এমবাপ্পেকে, ‘এমবাপ্পে বিস্ময়কর এক খেলোয়াড়। অসাধারণ খেলোয়াড় হওয়ায় তার ওপর এখন প্রবল চাপ। পেনাল্টির জন্য আমরা ম্যাচ হারিনি। ওরা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে। আমি জানি, সে সামনে এমন অনেক পারফরম্যান্স উপহার দেবে, যা ক্লাবের জন্য অনেক বড় কিছু।’
মন্তব্য করুন