মিরপুরে সম্মানজনক পরাজয় হলেও চট্টলায় মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না টাইগাররা। যে উইকেটে প্রোটিয়া ব্যাটাররা একের পর এক সেঞ্চুরি করতে ব্যস্ত, সেই একই মাঠে আসা যাওয়ার মিছিলে মুশফিক-মুমিনুলরা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ফলো অনে পরা বাংলাদেশ যখন প্রহর গুনছে ইনিংস ব্যবধানে হারের, ঠিক তখনই সাফজয়ী নারীদের বরণ করে নিয়েছে দেশবাসী।
ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়রা অনেকেরই বেতন প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেশি, এ ছাড়া ম্যাচ ফি আর বিপিএলের আয় ধরলে কোটি টাকা ইনকাম করা এসব ক্রিকেটাররা, দেশকে দিচ্ছেন কতটা? সেই প্রশ্ন তো তোলায় যায়। প্রশ্নটা আরও নতুন মাত্রা পায়, যখন তিন মাস ধরে বেতন না পাওয়া কোচের অধীনে, বেতন ও ম্যাচ ফি বঞ্চিত নারী ফুটবলাররা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়।
বিদেশি কোচিং স্টাফ ও আধুনিক সরঞ্জামাদির এত এত সুবিধা পাওয়ার পরও কেন ব্যর্থ ক্রিকেটাররা? ছাদখোলা বাসে মেয়েদের উল্লাস কি তাদের মনে একটুও নাড়া দেয় না, ইচ্ছে কি জাগে না দেশের ক্রিকেটে একটা বড় সাফল্য নিয়ে আরও বড় উদযাপন করতে? জাগলে সেই ইচ্ছের প্রতিফলন কোথায়? ম্যাচের পর ম্যাচ একইভাবে আউট আর ব্যর্থতার গল্পে সফলতার খাতা যে কেবলই শূন্য।
২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়া সাবিনাদের কষ্টের দিন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উল্টো বেতন বৃদ্ধির জন্য করতে হয়েছে আন্দোলন। অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের পর বেতন বৃদ্ধি হলেও সেটা অনিয়মিত। এতটাই অনিয়মিত যে, সাফ খেলতে যাওয়ার আগের তিন মাস ফুটবলার থেকে কোচ, কারও কপালেই জোটেনি বেতনের ছাড়। বেশ কয়েকটি ম্যাচে ম্যাচ ফি থেকেও বঞ্চিত হয়েছে লাল সবুজের এই প্রতিনিধিরা।
ছেলেদের ক্রিকেট কিংবা মেয়েদের ফুটবল, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সব জায়গাতেই মাঠের বাইরে থাকে নানা ইস্যু। নতুন কোচ, নতুন তত্ব, সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গে কোচের দুরত্ব, সবকিছুই তো প্রকাশ্য, কিন্তু তার কোনও ছাপ পড়েনি মাঠের খেলায়। চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়েই বাংলাদেশে এসে ছাদখেলা বাসে ঘুরছে তারা। কিন্তু ছেলেদের ক্রিকেটে হচ্ছেটা কি? আছে কি কোনো উত্তর?
প্রসঙ্গত, বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন