নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। আগামী ১৭ থেকে ৩০ অক্টোবর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হবে এবারের আসর। ২০২২ সালে ওই শহরেই প্রথমবারের মতো সাফ মুকুট জিতেছিল লাল-সবুজরা।
‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ খেলবে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। ‘বি’ গ্রুপে আছে স্বাগতিক নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। ১৭ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আসরের খেলা। ২০ অক্টোবর প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ২৩ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে শেষ গ্রুপ ম্যাচ খেলবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
শক্তিমত্তা এবং অতীতের রেকর্ড বিবেচনায় ‘এ’ গ্রুপ থেকে ভারত ও বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার কথা; কিন্তু এখানে গ্রুপসেরা হওয়াটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাতে ‘বি’ গ্রুপের সেরা দল নেপালকে পাশ কাটানো যাবে। গত আসরে নেপালের কাছে হেরেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। বড় দুর্ঘটনা না ঘটলে ‘এ’ গ্রুপের সেরা দলের নির্বিঘ্নে ফাইনালে যাওয়ার কথা। বাংলাদেশকে ‘এ’ গ্রুপের সেরা হতে হলে ভারতের বিপক্ষে হয় গ্রুপ ম্যাচ জিততে হবে, নয়তো ড্র করে পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল গড় বাড়িয়ে নিতে হবে।
গ্রুপ পর্বের উপরোক্ত হিসাবে যাওয়ার আগে দলগুলোর পারিপার্শ্বিক যে অবস্থা, তাতে বাংলাদেশের তুলনায় ঢের এগিয়ে থাকছে দুই প্রতিপক্ষ—নেপাল ও ভারত। পরিসংখ্যান কিন্তু সে কথাই বলছে। গত ২৫ মাসে ভারত ১৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। প্রতিপক্ষ ছিল কসোভো, উজবেকিস্তান, মিয়ানমার, এস্তোনিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান, থাইল্যান্ড, চায়নিজ তাইপে, জর্ডান। নেপাল খেলেছে ১৪ ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ছিল জর্ডান, লেবানন, ফিলিস্তিন, ইরাক, ভারত, ভিয়েতনাম, জাপান, বাংলাদেশ। বিপরীতে বাংলাদেশ খেলেছে ১১ ম্যাচ। তিনটি প্রতিযোগিতামূলক, বাকি ৮টি ফিফা প্রীতি ম্যাচ। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৪ ম্যাচ খেলেছে, সবগুলো প্রীতি ম্যাচ। ভারত খেলেছে ৭ ম্যাচ, অংশগ্রহণ করেছে টার্কিশ কাপে। নেপাল ৫ ম্যাচ খেলেছে, সবগুলোই পশ্চিম এশিয়া নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে।
উল্লিখিত সময়ের মধ্যে অলিম্পিক বাছাই খেলতে দল পাঠানোয় নাখোশ ছিলেন বাংলাদেশি ফুটবলাররা। ফুটবল ছেড়ে ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়েছেন সিরাত জাহান স্বপ্না। ইনজুরি-পরবর্তী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন ২০২২ সালের ফাইনালে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা রানী সরকার। ইনজুরির কারণে দলের বাইরে আছেন আরেক ফরোয়ার্ড আকলিমা খাতুন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ দল সেরা অবস্থানে নেই। প্রতি বিভাগে যোগ্য বিকল্প থাকায় অবশ্য ভাবনার কিছু দেখছেন না দল সংশ্লিষ্টরা। নারী দলের সাবেক কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন বাংলাদেশের শিরোপা ধরে রাখার কাজটা কঠিন বলেই মনে করছেন।
বাংলাদেশকে সাফ শিরোপা এনে দেওয়া এ কোচের কথায়, ‘২০২২ সালে সাফ জয়ের পর বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল কোন পর্যায়ে খেলেছে, দৃষ্টি রাখলেই সবকিছু পরিষ্কার হবে। ভারত ও নেপাল প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলেছে নিয়মিত। বাংলাদেশ বন্দি ছিল কয়েকটি প্রীতি ম্যাচের গণ্ডিতে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে দেশ দুটি এগিয়ে থাকবে। তা ছাড়া নেপাল স্বাগতিক সুবিধা নিয়ে খেলার কারণে আরও এগিয়ে থাকবে।’
মন্তব্য করুন