গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। সময়ের পরিক্রমায় জোরালো হতে থাকে সে দাবি। নাজমুল হোসেন পাপন পদত্যাগ করায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতির দায়িত্ব পান ফারুক আহমেদ।
এ ছাড়া হকি ও সাঁতার বাদে বাকি সব ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিদের অপসারণ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
তবে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাফুফে ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আর নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন কাজী সালাউদ্দিন। এতে বাফুফে থেকে অবসান হলো সালাউদ্দিন যুগের।
২০০৮ থেকে বাফুফের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আগামী ২৬ অক্টোবর হওয়ার কথা বাফুফের পরবর্তী নির্বাচন। সেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানান দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা এ তারকা।
নির্বাচন পেছানো প্রসঙ্গে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আমাদের বাফুফের নির্বাচন ২৬ অক্টোবর। বেসড অন দ্যাট ইলেকশন, কিছু লোকজনের চাওয়া ছিল নির্বাচনটা যাতে পেছায়। এই অনুরোধ বিবেচনায় এনে আমরা ফিফার কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। যার উত্তরও দিয়ে দিয়েছে, যা আপনাদের কাছে দিয়ে দিব। ফিফা বলেছে নির্বাচন একদিনও পেছানো যাবে না। এটা ফিফার নির্দেশনা।’
পরে নির্বাচন না করার ঘোষণায় বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগতভাবে যে কারণে বসেছি, আমি চার টার্ম আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। আমি নিজেকে অনেক বেশি সৌভাগ্যবান মনে করছি যে, এই সুযোগ আমার জীবনে এসেছে। এখন যে নির্বাচন ২৬ অক্টোবর হতে যাচ্ছে সেখানে আমি অংশগ্রহণ করব না। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এটা আপানাদের জানাতে এসেছি।’
দেশের কিংবদন্তি ফুটবলারের বাফুফে অধ্যায় ছিল চরম বিতর্কিত। দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে নিয়মিতই বিতর্কের জন্ম দিয়ে গেছেন তিনি। সাংবাদিকদের বেশ কয়েকবার করেছেন কটাক্ষ। তাই সাংবাদিকদের উদ্দেশে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই আমার সঙ্গে ১৬ বছর কাজ করার জন্য। এতে অনেক মতের মিল-অমিল হয়েছে, যা হতেই পারে। আমি এসব কিছুই মনে রাখছি না। আশা করি আপনারাও রাখবেন না।’
তার সময়ে ফুটবলের উন্নতির চেয়ে অবনতি হয়েছে বেশি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির বিস্তর ফারাক। এ সময় তাকে সমর্থনকের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘অনেক ধন্যবাদ আপনাদের সমর্থনের জন্য। আশা করব, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের যাতে অনেক উন্নতি হয়। ভবিষ্যতে যাতে আরও ভালোভাবে থাকে। এটলিস্ট আমার একটা মনে খুশি আছে যে, সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমি যেতে পারছি। এটা আমার ব্যক্তিভাবে একটা শান্তির জায়গা। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ জানাই।’
মন্তব্য করুন