ম্যানচেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা বলেছেন, প্রিমিয়ার লিগের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলো সিটির বিরুদ্ধে আনা আর্থিক নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই সিটির শাস্তি দেখতে চায়।
সিটি ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের আর্থিক নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে ১১৫টি চার্জের সম্মুখীন। দীর্ঘ চার বছরের তদন্তের পর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসব অভিযোগ আনা হয় এবং এটি একটি স্বাধীন কমিশনে পাঠানো হয়। তবে সিটি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের নিজেদের নির্দোষের পক্ষে ‘অখণ্ড প্রমাণ’ রয়েছে।
স্প্যানিশ লা লিগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাসও সিটির সমালোচক। তেবাস বারবার আবুধাবি-সমর্থিত ম্যানচেস্টার সিটি ও কাতার-সমর্থিত পিএসজিকে ‘স্টেট ক্লাব’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক ডোপিং’ এর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, অনেক প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব সিটিকে শাস্তি পেতে দেখতে চায়।
গার্দিওলা তেবাসের মন্তব্যের জবাবে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমি তেবাসের সঙ্গে একমত। সব প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আমাদের শাস্তি পেতে চায়, এটা নিশ্চিত। তবে আমি বলেছি, তেবাস ও প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোকে ধৈর্য ধরতে বলছি।’
গার্দিওলা আরও বলেন, ‘আধুনিক গণতন্ত্রে বিচার আছে। ইউরোপীয় ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার মতোই, আমরা বিশ্বাস করি আমরা কোনো ভুল করিনি।’
এই মামলাটি 'শতাব্দীর অন্যতম প্রধান খেলাসংক্রান্ত বিচার' হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে এবং এটি ১০ সপ্তাহ ধরে চলবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার রায় সম্ভবত ২০২৫ সালের শুরুতে ঘোষণা করা হবে।
প্রিমিয়ার লিগ সিটিকে তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগও করেছে। সিটি বলছে, জার্মান পত্রিকা ডের স্পিগেল দ্বারা প্রথমে প্রকাশিত অভিযোগগুলো অবৈধভাবে হ্যাক করা ইমেল থেকে এসেছে এবং এগুলো প্রসঙ্গের বাইরে তুলে ধরা হয়েছে। যদি সিটি সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের পয়েন্ট কেটে দেওয়া হতে পারে, যা তাদের প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত করতে পারে বা এমনকি লিগ থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে।
২০০৮ সালে আবুধাবি-সমর্থিত সিটি ফুটবল গ্রুপের মালিকানায় আসার পর থেকে ম্যানচেস্টার সিটি আটটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, বিভিন্ন ঘরোয়া কাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে।
গার্দিওলা বলেন, ‘এটি শিগগিরই শুরু হচ্ছে এবং আশা করি শিগগিরই শেষ হবে। আমি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। সবাই দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ। তাই দেখা যাক।’
ম্যানচেস্টার সিটির ১১৫টি অভিযোগের সারসংক্ষেপ
• ২০০৯-২০১৮ সালের মধ্যে আর্থিক তথ্য সঠিকভাবে প্রদান না করা: ৫৪টি অভিযোগ।
• খেলোয়াড় ও কোচদের পারিশ্রমিকের সঠিক বিবরণ না দেওয়া: ১৪টি অভিযোগ।
• ২০১৩-২০১৮ সালের মধ্যে উয়েফার ফাইন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে (এফএফপি) নিয়ম লঙ্ঘন: ৫টি অভিযোগ।
• ২০১৫-২০১৮ সালের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগের পিএসআর নিয়ম লঙ্ঘন: ৭টি অভিযোগ।
• ২০১৮-২০২৩ সালের মধ্যে প্রিমিয়ার লিগের তদন্তে সহযোগিতা না করা: ৩৫টি অভিযোগ।
মন্তব্য করুন