বদলি গোলকিপার থেকে বীর! বলা হচ্ছে মোহাম্মদ আসিফের কথা। সোমবার (২৬ আগস্ট) তার বীরত্বে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। টাইব্রেকে ভারতীয় দুই ফুটবলারের শট রুখে দিয়ে নিশ্চিত করেন লাল-সবুজের জয়। এখন প্রশ্ন উঠেছে নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে কি খেলবেন তিনি?
দ্বিতীয়ার্ধে ৬৫ মিনিটে দলের অধিনায়ক ও ১ নম্বর গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণ ইনজুরিতে পড়েন। মাথায় আঘাত পেয়ে তাকে যেতে হয় হাসপাতালে। বদলি হিসেবে নেমে শেষ পর্যন্ত জয়ের নায়ক বনে যান আসিফ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে তিনি জানান, বেঞ্চে থাকলেও প্রস্তুত ছিলেন মানসিকভাবে, ‘আমরা ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। যারা খেলবে বা যারা বেঞ্চে থাকবে, সবাই। মাঠে নামলেই যেন নিজেদের মেলে ধরতে পারি, প্রস্তুতিটা সে কারণেই। ম্যাচটা যে কোনো মূল্যে জিততে চেয়েছিলাম। তাই মাঠে ও বেঞ্চের সবাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম।’
ভারতের বিপক্ষে সোমবার (২৬ আগস্ট) নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমিতে প্রথমার্ধে ১-০ গোলের লিড পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে ভারত। এতে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলের ড্রতে।
টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। সেখানে গোলকিপার মোহাম্মদ আসিফের দুর্দান্ত দুই সেভে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশের যুবারা।
শ্রাবণের বদলি হিসেবে তিনি মাঠে নামার পর গোল হজম করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল। এরপরও মানসিকভাবে শক্ত থাকার কথা জানান আসিফ, ‘আমি যখন মাঠে নামি, বাংলাদেশ এক গোলে এগিয়ে। ভারত সমতা ফেরায় আমি নামার পরই। কিন্তু আমি মানসিকভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম যে খেলাটা যদি টাইব্রেকারে গড়ায়, তাহলে নিজেকে উজাড় করে দেব। আমি আগেও এ ধরনের ম্যাচ খেলেছি, পরিস্থিতিটা আমার কাছে নতুন কিছু ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছি সবকিছু।’
টাইব্রেকে প্রতিপক্ষের শরীরী ভাষার দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর কথা জানান আসিফ, ‘দ্বিতীয় শটে ভারতের আকাশের শরীরী ভাষায় কিছুটা নার্ভাসনেস টের পাই। আমিও ওকে কথা দিয়ে কাবু করতে চেয়েছি। পরে দেখি সে আমার পায়ে মেরে দিয়েছে। প্রথম শটে বডি ডজ দিতে চেয়েছিলাম। বাঁদিকে ঝাঁপানোর ভান করে ডান দিকে ঝাঁপ দিই। ভারতের হয়ে টাইব্রেকার নিচ্ছিল যে, সেও ডান দিকেই মারে।’
এর আগেও খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন আসিফ। বাফুফের এলিট একাডেমির এ গোলকিপারকে সর্বোচ্চ ১৩ লাখ টাকায় কিনেছিল বসুন্ধরা কিংস। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বুধবার (২৮ আগস্ট) নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
মাথায় চোট পাওয়ায় শিরোপার লড়াইয়ে নামতে পারবেন না মেহেদী হাসান শ্রাবণ। ফলে টুর্নামেন্টের ফাইনালের একাদশে মোহাম্মদ আসিফের থাকা অনেকটা নিশ্চিত।
এদিকে ইনজুরি আক্রান্ত মেহেদী হাসান শ্রাবণকে নিতে হয় হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যায় তার মাথায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। আজ মঙ্গলবার দেশে ফেরার কথা তার। দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারটি দেশে করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন