গ্যারি লিনেকারের স্বপ্ন ছিল ইংল্যান্ডের হয়ে ইউরো জয়ের। তিনি পারেনি। এবার ধারাভাষ্যকার হিসেবে ইউরো কাভার করছেন। মাইক্রোফোনের সামনে থেকে ইংল্যান্ডের ইউরো জয় উদযাপন করতে চান। কিন্তু ভয় পাচ্ছেন স্পেনের উড়ন্ত ফুটবলকে।
তিকিতাকা এখন আর পাসের টেউ তুলে গোলমুখে খেই হারাচ্ছে না। উল্টে এমন কারুকার্যময় গোলের শিল্প রচনা করছে যে, লিনেকার মনে মনে ভয় পাচ্ছেন। বেশি ভয় পাচ্ছেন লামিন ইয়ামালেকে নিয়ে। স্পেনের এই বালক বীর মাত্র ১৬ বছরেই বিশ্বজয় করার পথে।
১৭-তে পা দিয়েছেন শনিবার। জন্মদিন পালন করেই আজ আরও এক মহোৎসবের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি। বরাবর নিজের ঢোল পেটানো ইংলিশ মিডিয়া জানে, ইয়ামালের একটা ফুলের মতো পাস কিংবা ঢেউয়ের মতো কোমর দোলানো ডজ তাদের স্বপ্নের বেলুন ফুটো করে দিতে পারে। লিনেকারের ভয়টাও সেখানেই।
বার্লিনে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় যতটা রক্তিম লাগছে স্পেনকে ততটা রঙিন মনে হচ্ছে না ইংলিশদের। বরং সাদাকালো জার্সির ইংল্যান্ড ফাইনালে কতটা কী করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয়ে ভুগছেন লিনেকারের মতো পোড় খাওয়া কিংবদন্তিরাও।
Spain EnglandBerlin. Sunday.#EURO2024 pic.twitter.com/f1NqmQfOpO
— UEFA EURO 2024 (@EURO2024) July 10, 2024স্পেনের মুগ্ধতা ছড়ানো ফুটবলের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘ওদের ম্যাচ খেলার ধরনটা আমি পছন্দ করি। ওদের ভয়ডরহীন ফুটবলও আমার পছন্দ। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছে স্পেন। কি প্রেসিং। উইঙ্গাররা উপরে উঠে আসছে। ফ্রান্সের বিপক্ষে কি অসাধারণ ফুটবলই না খেলেছে তারা। অবশ্য সব ম্যাচেই তারা ভালো খেলেছে। ছয়টা ম্যাচ জিতেছে তারা পেনাল্টির সাহায্য ছাড়া। কত ভালো ভালো ফুটবলার আছে দলে। পেদ্রি, অলমো। মোরাতা অসাধারণ। রদ্রি তো এই সময়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এবং লামিন ইয়ামালে—ছেলেটা প্রতিভার বিস্ফোরণ! পেলেও যখন বিশ্বকাপ ফাইনালে ২ গোল দিয়েছিল, তখন সেও লামিন থেকে বয়সে এক বছর বড় ছিল। লামিন আমার জীবনে দেখা সেরা ১৬ বছর বয়সী খেলোয়াড়।’
তাহলে কি ইংল্যান্ডের আশা নেই? ইউরো ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে সব হিসাব গুলিয়ে যেতে পারে মুহূর্তের ভুলে। তা ছাড়া গ্যারেথ সাউথগেটের ব্রিটিশ চতুরতা স্পেনের কবর খুঁড়তে পারে। যদিও জুড বেলিংহাম যেমন রিয়াল মাদ্রিদে খেলেন ইংল্যান্ডের হয়ে তার অর্ধেক খেলতে পারছেন না। অধিনায়ক হ্যারি কেনও ধুঁকছেন।
পেনাল্টির দৌলতে দল ফাইনালে উঠলেও ঠিক ছন্দে আছে বলে মনে হচ্ছে না। তবু বেলিংহাম নিজের দিনে যে কোনো প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম। যদিও ভায় পাচ্ছে না অলমো। তিনি বলেছেন, ‘কাউকে ভয় পাই না। বেলিংহাম একটা উদাহরণ মাত্র। নাম দিয়ে কী হবে। ওকেও মাঠে নেমেই খেলতে হবে। বেলিংহাম ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। ওকে নিয়ে আমাদের অবশ্যই কিছু পরিকল্পনা থাকবে। তবে আমি কাউকে নিয়ে চিন্তিত নই।’
এমন ভয়ডরহীন স্পেনকে থামানো সহজ নয়।
মন্তব্য করুন