বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে হয় কলম্বিয়া-উরুগুয়ের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল।
তবে শেষটা হয় হিংসাত্মকভাবে। কলম্বিয়ার কাছে হেরে ফাইনালে উঠতে না পেরে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন উরুগুয়ের ফুটবলাররা।
প্রথমে মাঠে কলম্বিয়ান ফুটবলারদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান তারা। এরপর ডারউইন নুনেজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন উরুগুয়ের ফুটবলার গ্যালারিতে গিয়ে কলম্বিয়ার সমর্থকদের উপর হামলা চালান। তাদের ঘুষি মারার দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরায়।
এ নিয়ে লাতিন আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল) কড়া বার্তা দিলেও ফুটবলারদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ইগনাসিও আলোনসো। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতেই এমনটা করেছেন ফুটবলাররা।
ম্যাচে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারায় কলম্বিয়া। আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পরপরই মাঠে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুদলের ফুটবলাররা।
যা ছড়িয়ে পড়ে গ্যালারিতেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুদলের জার্সি পরিহিত মানুষ হাতাহাতিতে লিপ্ত। আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায় গ্যালারিতে উঠে কলম্বিয়ার সমর্থকদের ওপর হামলা চালান ডারউইন নুনেজ।
This footage shows a bit clearer what happened between Darwin Nuñez and the Colombian fans. pic.twitter.com/AHKjDGIj42 — Uruguay Football ENG (@UruguayFootENG) July 11, 2024
এ সময় তার সঙ্গে যোগ দেন বেশ কয়েকজন উরুগুয়ের ফুটবলারও। আর্জেন্টিনার আরেক গণমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছেন, গ্যালারিতে ঢুকে কলম্বিয়ার সমর্থকদের লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ঘুষি মারেন উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ইনজুরির কারণে সেমিতে খেলতে না পারা বার্সার উরুগুয়ের ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহো। গণমাধ্যমটি আরও জানায়, উরুগুয়ের ফুটবলারদের বেশ কিছু আত্মীয়-স্বজন ওই গ্যালারিতে ছিলেন।
কলম্বিয়ার সমর্থকদের বাজে আচরণের শিকার হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন উরুগুয়ের ডিফেন্ডার হোসে মারিয়া হিমিনেজ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ দিকে এ ঘটনায় কড়া এক বিবৃতি দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল পরিচালনা পর্ষদ (কনমেবল)। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফুটবলকে প্রভাবিত করে এমন কোনো সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না। এই ঘটনার কঠোর নিন্দা করা হচ্ছে। মাঠে এবং মাঠের বাইরে অসহিষ্ণুতা ও হিংসার কোনো স্থান নেই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বাকি দিনগুলোতে ধৈর্যের সঙ্গে পরিচ্ছন্নভাবে টুর্নামেন্ট শেষ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’
তবে ফুটবলারদের পক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন উরুগুয়ের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইগনাসিও আলোনসো। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা তাদের পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, 'উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের এটি একটি সহজাত প্রতিক্রিয়া, যা একেবারে স্বাভাবিক ঘটনা। তারা সে গ্যালারিতে থাকা শিশু, মহিলা, বাবা-মা, ভাই-বোন আর পরিবারের নিকট আত্মীয়, যারা আক্রমণের শিকার হয়েছিল তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছে।'
মন্তব্য করুন