২০১৪ বিশ্বকাপ, ইনজুরির কারণে নেই দলের সেরা তারকা রাদামেল ফ্যালকাও। তবে নজর কাড়েন তরুণ এক ফুটবলার হামেস রদ্রিগেজ। জাপানের বিপক্ষে তার বাঁ পায়ের অসাধারণ ভলিতে করা গোলটি জেতে আসর সেরার পুরস্কার।
পরের দশ বছরে, যেভাবে এগোনোর কথা ছিল এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের কিছুই হয়নি। থিতু হতে পারেনি নির্দিষ্ট এক ক্লাবে। ঘুরেছেন এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে।
আস্তে আস্তে পাদপ্রদীপের আলো থেকে সরে গেলও জাতীয় দলের জার্সিতে তিনি এখনও কার্যকর। আর তা প্রমাণ করে চলেছেন চলতি কোপা আমেরিকায়। তিনি এবার কোপার সেরা খেলোয়াড় হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
২০১৪ বিশ্বকাপের আগে তার নাম খুব একটা শোনা যায়নি। আর্জেন্টাইন ক্লাব ব্যানফিল্ড থেকে পর্তুগালের পোর্তোর হয়ে শুরু তার ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল ক্যারিয়ার। এরপর ফরাসি ক্লাব মোনাকোতে যোগ দিয়ে আসেন বিশ্বকাপে।
৬ গোল করে জেতেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট। চলে আসেন স্পটলাইটে। বিশ্বকাপের পর ৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে মোনাকো থেকে তাকে কিনে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে বিশ্বকাপের সেই পারফরম্যান্স দেখা যায়নি ক্লাব ফুটবলে।
পরে তাকে ধারে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে খেলতে পাঠায় রিয়াল। এরপর থেকে ‘যাযাবরে’র মতো ঘুরছেন তিনি। ইংলিশ ক্লাব এভারটন থেকে যান কাতারের আল-রাইয়ানে।
সেখান থেকে গ্রিসের অলিম্পিয়াকোস হয়ে বর্তমানে খেলছেন ব্রাজিলের সাও পাওলোতে। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে ভীষণ অনুজ্জ্বল হামেস জাতীয় দলের জার্সিতে জ্বলে ওঠেন আপন দীপ্তিতে।
সৃজনশীলতায় তিনি অতুলনীয়। চলতি কোপা আমেরিকায় দুর্দান্ত খেলছেন হামেস। ২০২২ সালে সর্বশেষ আর্জেন্টিনার কাছে হেরেছে কলম্বিয়া। এরপর গত দুই বছরের কোনো ম্যাচ হারেনি তারা। টানা ২৮ ম্যাচে অপরাজিত থাকার অন্যতম কারিগর তিনি।
আর্জেন্টাইন কোচ নেস্তর লরেঞ্জোও তাকে ব্যবহার বেশ ভালোভাবে। ৪-৩-১-২ ফরমেশনে দুই ফরোয়ার্ডকে সামনে রেখে খেলানো হচ্ছে হামেস রদ্রিগেজকে। এ ছাড়া নম্বর টেন পজিশন থেকে তার মনোযোগ শুধু গোল করানোয়।
গোল করার ক্ষেত্রে তিনি বারবার খুঁজে নিয়েছেন সতীর্থদের। দুর্দান্ত সব অ্যাসিস্টে নজর কাড়েছেন এবারের আসরে। সেমিফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ৩৯ মিনিটে হামেস রদ্রিগেজের কর্নার থেকে কলম্বিয়ার হয়ে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জেফারসন লেরমা।
এ নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ ৬টি অ্যাসিস্ট কলম্বিয়ান অধিনায়কের। এতে লিওনেল মেসিকে পেছনে ফেলে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের পাশে নাম লেখালেন হামেস। মেজর টুর্নামেন্টে পেলের পর দ্বিতীয় লাতিন ফুটবলার হিসেবে এক আসরে ৬টি অ্যাসিস্টের কীর্তি গড়লেন এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
এ ছাড়া কোপা আমেরিকার এক আসরে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। এ ছাড়া দুই গোলও রয়েছে তার। গত আসরে কোপা জয়ী আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসির অ্যাসিস্ট ছিল ৫টি।
EL MUNDO estará mirándolos pic.twitter.com/taReuTPEUt — CONMEBOL Copa América️ (@CopaAmerica) July 11, 2024
চলতি আসরের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। সবচেয়ে বড় কথা ফিনিক্স পাখির মতো আবারও পুনরুজ্জীবিত হচ্ছেন হামেস রদ্রিগেজ।
মন্তব্য করুন