বাজে ফর্মে থাকার কারণে বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে ভক্ত এবং ক্রিকেট বোদ্ধাদের তেমন কোন আশা ছিল না বললেই চলে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হারা টাইগাররা বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফর্মে ফেরার সাথে সাথে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়। তবে নিউইয়র্কে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই আবার হতাশ করে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্বল্প রানে আটকেও ৪ রানে ম্যাচ হারতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের পেসারদের দাপটে ১১৩ রানে থামে প্রোটিয়ারা। জবাবে তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহর চেষ্টার পরেও বাংলাদেশ ৪ রানে ম্যাচ হেরেছে।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩৪ বলে ৩৭ রান করেন হৃদয় আর ২৭ বলে ২০ রান করে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ২৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন কেশভ মহারাজ।
১১৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও নাজুমল হোসেন শান্ত। কাগিসো রাবাদার ওভারে পরপর দুই বলে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন তামিম। তবে ওই ওভারেই বাধে বিপত্তি। ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি ককের হাতে ধরা পড়েন তামিম (৯)। কেশভ মহারাজের প্রথম বলে আউট হন লিটন (৯)।
দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন দলের সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আনরিখ নর্কিয়াকে পুল করতে গিয়ে মিড অনে মার্করামকে সহজ ক্যাচ দেন তিনি। পরে প্রায় একইভাবে আউট হন টাইগার দলপতি শান্ত।
দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় রয়েছে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তরুণ তুর্কি তাওহীদ হৃদয়। এ দুজনের ব্যাটিং বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে বাংলাদেশ দল। তবে ভাগ্য আজ সাথে ছিল না।
১৭ ওভার শেষে দলের সংগ্রহ তখন ৯৪ রান। শেষ তিন ওভারে দরকার ২০ রান। তবে তখনই লেগ বিভোরের শিকার হন হৃদয়। যদিও রাবাদার বলে আবেদন ওতো জোরালোও ছিল না তবে আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ দ্রুতই আউটের নির্দেশ দেন। বলটি লেগ স্টাম্পের চূড়ায় হালকা ছুঁয়ে যায় তাই রিভিউ নিয়েও তাই কাজ হয়নি। আম্পায়ার্স কলে আউট ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৩৪ বলে ৩৭ রান করা হৃদয়।
ওদিকে তার আগের ওভারে বাংলাদেশের ক্ষতি করেন অন্য ফিল্ড আম্পায়ার স্যাম নোগাস্কি। মাহমুদউল্লারহ প্যাড ছুঁয়ে পেছনে বাউন্ডারি হওয়া বলে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। রিভিউতে দেখা যায় বল স্টাম্প মিস করেছে। কিন্তু আগে আউট দেয়ায় বাউন্ডারি পায়নি বাংলাদেশ। বল ডট হিসেবে গণ্য হয়। কপালটাও খারাপ বলা যায় টাইগারদের।
শেষ দুই বলে যখন ৬ রানের প্রয়োজন তখন মহারাজের ফুলটস বলে সজোরে লং অনের ওপর দিয়ে তুলে মারেন মাহমুদউল্লাহ। সেটি সীমানার কাছ থেকে লাফিয়ে তালুবন্ধি করেন মারক্রাম। অবিশ্বাস নিয়ে কিছুক্ষণ বাউন্ডারির দিকে তাকিয়ে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলও ছিল ফুলটস তবে তাসকিন কিছু করতে না পারায় ৪ রানে হারতে হয় বাংলাদেশের।
এর আগে ডেভিড মিলার ও হাইনরিখ ক্লাসেনের অর্ধশত রানের জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রান করে প্রোটিয়ারা। তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদের গতিময় বোলিংয়ে দুর্দান্ত শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। দুই পেসারের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ২৩ রানে টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ধুঁকছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে প্রোটিয়াদের ম্যাচে ফেরান মিলার ও ক্লাসেন। দুজনের অর্ধশত রানের জুটিতে লড়াকু পুঁজি পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের পক্ষে তানজিম সাকিব ১৭ রান খরচায় তিন উইকেট নেন।
মন্তব্য করুন