ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেমন রানের ফোয়ারা ছোটে তেমনি আবার সর্বনিম্ন রানে ব্যাটিং অর্ডার গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ডও হয়। বৈশ্বিক এই মঞ্চে অনেক নাটকীয় ম্যাচ দেখা গেছে, যেখানে দলগুলো কখনো কখনো বড় মঞ্চের চাপে নুইয়ে পড়ে।
যেমনটি হয়েছে রোববার (৯ জুন) ওয়েস্ট ইন্ডিজ উগান্ডার মধ্যকার ম্যাচে। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসে উগান্ডা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে আউট হয়। তবে নবাগত এই দেশটি শুধু নয়। বিশ্বকাপে বড় মঞ্চের চাপ নিতে পারে না অনেক বড় দলও। দেখে নেওয়া যাক মারদাঙ্গার বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন পাঁচটি স্কোর :
১. নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৯ রানে অলআউট, ২০১৪
বাংলাদেশে হওয়া ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় এবং টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড গড়ে। ডাচরা মাত্র ১০.৩ ওভারে ৩৯ রানে গুটিয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার বোলাররা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের নেতৃত্বে ডাচদের কচু কাটা করেন। ম্যাথুজ ৩ উইকেট নেয় ১৬ রানে। ডাচ ব্যাটসম্যানরা শ্রীলঙ্কার নিয়মিত এবং আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের জবাব দিতে পারেনি, ফলে দ্রুত এবং ব্যাপক পরাজয় ঘটে।
২.উগান্ডা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৯ অল আউট, ২০২৪
উগান্ডা ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩৯ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসের রেকর্ডে ভাগ বসায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে উগান্ডা আকিল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের মুখোমুখি হয়, যিনি ১১ রানে ৫ উইকেট নেন। এই ম্যাচটি নবাগত দলের উচ্চ-চাপের টুর্নামেন্টের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে, যদিও উগান্ডা প্রতিযোগিতার আগের ম্যাচেই একটি ঐতিহাসিক বিজয় দেখিয়েছিল।
৩. নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৪ অল আউট, ২০২১
নেদারল্যান্ডসের আবারও ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে ৪৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে এই তালিকায় স্থান পায়। লঙ্কান বোলাররা, কুমারা ও হাসারাঙ্গার নেতৃত্বে ডাচ ব্যাটিং লাইনআপকে ভেঙে দেয়। ১৪.২ ওভারে নেদারল্যান্ডসের অলআউট হওয়া সহযোগী এবং পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যবধানকে তুলে ধরে।
৪. ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৫ অল আউট, ২০২১
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৫ রানে গুটিয়ে যায়। আদিল রশিদ ইংল্যান্ডের আক্রমণের নেতৃত্ব দেন এবং একটি অসাধারণ স্পেলে, ৪ উইকেট নেন মাত্র ২ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তাদের পাওয়ার-হিটিং খ্যাতি থাকা সত্ত্বেও, ইংল্যান্ডের বোলারদের বিরুদ্ধে টিকতে পারেনি, ১৪.২ ওভারে গুটিয়ে যায়। এই ম্যাচটি দেখায় কীভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী দলও চাপে ভেঙে পড়তে পারে।
৫. উগান্ডা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৮ অল আউট, ২০২৪
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উগান্ডার আরেকটি কঠিন ম্যাচ ছিল উঠতি শক্তি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। ম্যাচটিতে ৫৮ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ফজল হক ফারুকির নেতৃত্ব দেন একটি অনুপ্রাণিত আফগান বোলিং পারফরম্যান্সে। তিনি ৫ উইকেট নেন। উগান্ডার ব্যাটিং লাইনআপ চাপের মধ্যে ভেঙে পড়ায় তাদের দ্বিতীয়বারের মতো সর্বনিম্ন স্কোরের তালিকায় স্থান করে দেয়।
এই ম্যাচগুলো দলগুলোর ব্যাটিং ধসের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের রোমাঞ্চকর অনির্দেশ্যতাও তুলে ধরে। প্রতিটি নিম্ন স্কোরের উদাহরণ অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্সের একটি প্রমাণ, যেখানে একটি ওভারও শক্তির ভারসাম্যকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করতে পারে। নতুন দলগুলি যখন প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করে, এই রেকর্ডগুলো সতর্কবার্তা এবং অনুপ্রেরণা উভয় হিসাবে কাজ করে, দেখায় যে সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে সাফল্য এবং ব্যর্থতার মধ্যে সুনির্দিষ্ট পার্থক্য কতটা সূক্ষ্ম হতে পারে।
মন্তব্য করুন