২০১৬ সালে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শিরোপার মঞ্চেও অনবদ্য ক্যারিবিয়রা। ইংল্যান্ডের নাস্তানাবুদ করে দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উৎসবে মাতে ক্যারিবিয়রা।
কেটেছে ৮ বছর। ক্রিকেট বিশ্বে ঘটে গেছে অনেক কিছু। কলকাতার সেদিনের ‘ভিলেন’ বেন স্টোকস তখন ইংলিশদের চোখের মনি। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় হওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জেতান তিনি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যেন তলিয়ে গেছে অতল গহবরে!
২০১৬ সালের পর ২০২১ সালে হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া সপ্তম আসরে বাদ পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকে। পরের বছর খেলতে হয় বাছাই পর্ব। আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় খেলা হয়নি সুপার টুয়েলভে। ফলে ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি ক্যারিবিয়রা।
নানামুখি ব্যর্থতা পেছনে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেমেছে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে। রেকর্ডসংখক ২০ দলের অংশগ্রহণে নবম আসরের সহ-আয়োজক তারা। বিশ্ব আসরের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামছে ক্যারিবিয়রা। প্রতিপক্ষ ওশেনিয়া মহাদেশের দেশ পাপুয়া নিউগিনি (পিএনজি)। গায়ানায় বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে অনেক কদর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের। পাওয়ার হিটিংয়ের জন্য বেশ খ্যাতিও রয়েছে তাদের। এমন দলের বিপক্ষে কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারে পিএনজির ক্রিকেটাররা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
অপেক্ষাকৃত দূর্বল প্রতিপক্ষ বলেই শঙ্কা একটা জায়গা রয়েছে অনেকের। গত আসরে আইরিশ ও স্কটিশদের কাছে হেরে বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নেয় নিকোলাস পুরানের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এতে অধিনায়ক পুরানের সঙ্গে পদত্যাগ করেন সেবারের কোচ ফিল সিমন্স। হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০১২ ও ২০১৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ড্যারিন স্যামিকে।
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, তাই সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চান সাবেক এই অধিনায়ক, ‘বোলাররা চাপে পড়েছে। শুধু তরুণ বোলাররাই নয়, সব আন্তর্জাতিক বোলারই চাপে ছিল। আইপিএলের (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) দিকে তাকান, দলগুলো ২০০ রান করছে। কিন্তু এটা মোটেও নিরাপদ সংগ্রহ নয়। যা আপনাকে বলে দেয় যে ব্যাটসম্যানরা (ব্যাটাররা) এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আধিপত্য বিস্তার করছে। পার্থক্য হবে কিছু এক্স ফ্যাক্টর বোলারের। সেটা রহস্যময় স্পিন হোক বা গতিময় হোক না কেন, প্রতিপক্ষকে আটকাতে প্রতিটি দলে এমন একজন বোলার দরকার।’
বিশ্ব ক্রিকেটে আগের মতো আধিপত্য দেখা যায় না ক্যারিবিয়ানদের। এর মাঝেই প্রতিশ্রুতিশীল প্রজন্ম উঠে আসছে। স্যামির কথা অনুযায়ী ক্যারিবিয়দের জন্য এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন শামার জোসেফ।
চলতি বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে স্বাগতিদের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে নিজেকে চেনান তিনি। এতে অজিদের মাটিতে ১৯৯৭ সালের পর প্রথম জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এ পেসারে ভরসা রাখছেন ক্যারিবিয়দের কোচ। এবার স্বরূপে ফিরবে তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট।
মন্তব্য করুন