এক যুগ আগের কথা, ওয়াংখেড়েতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। মাঠে ধূমপান এবং কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে এ মাঠে প্রবেশাধিকার হারান কলকাতার মালিক শাহরুখ খান।
সেদিনের পর মুম্বাইয়ের মাঠে আর জয় পায়নি কলকাতা। অবশেষে আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটারের হাত ধরে মুম্বাই জয় করল কলকাতা। এ জয়ে প্লে-অফ পর্বের কাছাকাছি পৌঁছে গেল শাহরুখ খানের দল। অন্যদিকে এই হারে লিগ পর্ব থেকে মুম্বাইয়ের বিদায়ও একরকম নিশ্চিত।
নিলামে ২৪.৭৫ কোটি রুপিতে মিচেল স্টার্ককে কিনে সকলকে চমকে দিয়েছিল কলকাতা। আট বছর পর আইপিএল খেলতে আসা অজি ক্রিকেটার নিজের সেরা কতটা দিতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বারবার।
আর একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পরও তাকে একাদশে রাখা কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্নটাও আসছিল ঘুরে ফিরে। তবে নামটা যে মিচেল স্টার্ক, এতেই যথেষ্ট। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ঠিকই চেনালেন নিজের জাত। আগুনঝরা বোলিংয়ে মুম্বাইকে উড়িয়ে দেখিয়ে দিলেন কেন তিনি আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার?
স্টার্ককে চার উইকেটে মুম্বাই জয় করে কলকাতা। এক যুগ ধরে ওয়াংখেড়েতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারাতে পারছিল না কলকাতা নাইট রাইডার্স। অবশেষ শুক্রবার (৩ মে) ঘুচে সেই আক্ষেপ।
গতির ঝড়ে সূর্যকুমার যাদবের তাণ্ডব থামিয়ে ২৪ রানে মুম্বাইকে হারায় কলকাতা। ১২ বছর পর পাওয়া এ জয়ে প্লে-অফের দৌড়ে অনেকখানিক এগিয়ে গেছে দুইবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
নুয়ান থুসারা ও জসপ্রিত বুমরার বোলিং তোপে ১৬৯ রানে অলআউট হয় কলকাতা। মাত্র ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়েছিল দলটি। কিন্তু ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও মনিষ পান্ডের জুটিতে লড়াকু সংগ্রহ পায় কলকাতা।
৩১ বলে ৪২ রান করে মনিষ আউট হলে ভাঙে দুজনের ৮৩ রানের জুটি। আর সর্বোচ্চ ৭০ রান আসে ভেঙ্কটেশের ব্যাট থেকে। মাত্র ২৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় কলকাতা। বুমরা ও থুসারা নেন তিনটি করে উইকেট। অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার দুই উইকেট।
মাঝারি স্কোর তাড়া করতে নেমে দলীয় ৭১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে মুম্বাই। এরপর সূর্যকুমার ও টিম ডেভিডের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ইনিংসের ১৬তম ওভারে দুজনের ৪৯ রানের জুটি ভাঙেন আন্দ্রে রাসেল। ৩৫ বলে ৫৬ রান করে থামেন সূর্যকুমার।
এরপর মুম্বাইকে লড়াইয়ে রেখে ছিলেন টিম ডেভিড। ১৯তম ওভারে মিচেল স্টার্কের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে আশা জাগান অজি ব্যাটার। তবে ডেভিড ও পিযুষ চাওলাকে পরপর দুবলে আউট করেন আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। ২০ বলে ২৪ রান করে আউট হন ডেভিড।
স্টার্ককে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করেন বুমরা। তবে পঞ্চম বলে জেরাল্ড কোয়েৎজেকে বোল্ড করে কলকাতার জয় নিশ্চিত করেন বাঁহাতি এই অজি পেসার। ১৮.৫ ওভারে ১৪৫ রানে অলআউট স্বাগতিকরা। ৩.৫ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে কলকাতার সেরা বোলার স্টার্ক।
১০ ম্যাচে ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়তে কলকাতা। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬ পয়েন্টে টেবিলের ৯ নম্বরে রয়েছে মুম্বাই।
মন্তব্য করুন