ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বেশ ভালোই কথা চলছিল বাজবল কি পারবে ভারতকে তাদের মাটিতে হারাতে? প্রথম টেস্ট জয়ের পর ভালো লড়াইয়েরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল বাজবলের ধারকেরা। তবে ইংলিশদের সাফল্য সেই প্রথম টেস্টেই। সিরিজের বাকি তিন টেস্টে রুট-স্টোকসের রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের বাজবল ক্রিকেটে আজকের আগে কখনোই সিরিজ হারেনি ইংল্যান্ড। তবে ভারতের মাঠে রাঁচি টেস্টে ৫ উইকেটের হারে নিশ্চিত হয়েছে তাদের বাজবলে প্রথমবারের মতো সিরিজ হার। ম্যাককালামের অধীনে ৭ সিরিজ অপরাজিত থাকার পর ইংরেজদের প্রথম সিরিজ হারের স্বাদ দিলেন শুভমান গিল এবং ধ্রুব জুরেল।
তবে রাঁচিতে সহজে জয় আসেনি ভারতের। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলাতে থাকা এই টেস্ট ম্যাচে একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল ইংলিশদের হাতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। তবে সেখান থেকে ৭২ রানের জুটিতে ভারতকে সহজেই ম্যাচ জেতান শুভমান গিল এবং ধ্রুব জুরেল। ১৯২ রানের টার্গেট টপকে যেতে ভারতকে খেলতে হয়েছে চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত। ৩-১ এর লিডে সিরিজটি নিশ্চিত করল ভারত।
১৯২ রানের স্বল্প লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮৪ রান কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। তবে এরপরই শোয়েব বশির এবং টম হার্টলিরা ছড়ি ঘোরাতে শুরু করে ভারতের ওপর। পরের ৩৬ রান করতেই তারা হারিয়েছে ৫ উইকেট।
প্রথমে দুই ওপেনার রোহিত ও যশস্বীকে ফেরত পাঠান হার্টলি ও রুট। এরপরই রজত পতিদার, রবীন্দ্র জাদেজা এবং সরফরাজ খানকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শোয়েব বশির। ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখতে থাকে জয়ের। কিন্তু সেখানেই প্রতিরোধ গড়েন ধ্রুব জুরেল এবং শুভমান গিল। সময় নিয়ে সিঙ্গেলস আর ডাবলসে খেলেছেন দুজনে। বড় শট খেলার চিন্তা বাদ দেওয়া কাজে লেগেছে ভারতের জন্য। সেট হয়ে বড় শট খেলেছেন, তবে সেটাও বিপদ ডাকতে পারেনি। সহজ জয়ে নিশ্চিত করে মাঠে ছেড়েছেন তারা। গিল অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। আর ৩৯ রান এসেছে জুরেলের ব্যাট থেকে।
চতুর্থ দিনের মতোই রং বদলেছিল রাঁচি টেস্টের শুরু থেকে শেষ অব্দি। এই সিরিজে রান করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন জো রুট। চতুর্থ টেস্টে সবার ব্যর্থতার দিনে তিনিই করেছিলেন সেঞ্চুরি। বাকিদের কাছ থেকে যোগ্য সঙ্গ না পেলেও তার ১২২ রান দলকে নিয়ে গিয়েছে ৩৫৩ পর্যন্ত।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শোয়েব বশিরের ফাইফারে বিপর্যস্ত ছিল ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ। ১৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদের শঙ্কায় ছিল স্বাগতিকরা। সেখান থেকে দলের ত্রাতা হয়েছিলেন ধ্রুব জুরেল। ৯০ রানের ইনিংসটায় ভর করে দলীয় স্কোর ৩০০ ছাড়াতে সাহায্য করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
লিড নিলেও সেটা অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে উপভোগ করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। জ্যাক ক্রলির ব্যাট থেকে ৬০ রানের ইনিংস ছাড়া আর কেউই বলার মতো স্কোর করতে পারেননি। কুলদীপ যাদব আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের কল্যাণে ১৪৫ রানেই শেষ হয় ইংলিশদের ইনিংস। ১৯২ রানের টার্গেট পায় ভারত। যেটা তারা টপকেছে গিল আর রোহিতের ফিফটিতে ভর করে।
মন্তব্য করুন