বিপিএলের এবারের আসর শুরুর আগে কাগজে কলমে শিরোপার সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার ভাবা হচ্ছিল রংপুরের ফ্রাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্সকে। দেশ ও দেশের বাইরের দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড়ের সম্বনয়ে করা দলটি অবশ্য আসরের শুরুতে অফ ফর্মে ছিল বলতে হবে। তবে দুই হারের পর সাত জয়ে প্লে-অফের সন্নিকটে রংপুরের ফ্রাঞ্চাইজিটি। যার সর্বশেষটি এল চট্টগ্রামের মাটিতে খুলনাকে উড়িয়ে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে সাকিবের ঝড় পরে বোলিংয়ে তাহিরের ঘূর্ণিতে বেশ বড় হারই বরণ করে নিতে হয়েছে এনামুল হক বিজয়ের দলকে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ২১৯ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ করে টেবিল টপার রংপুর রাইডার্স। রংপুরের পক্ষে সাকিব ৩১ বলে ৬৯ ও শেখ মাহেদী খেলেন ৩৬ বলে ৬০ রানের ঝোড়ো এক ইনিংস। পাহাড়সম এই রানের লক্ষ্যে প্রোটিয়া বোলার ইমরান তাহিরের ঘূর্ণিতে ১০ বল বাকি থাকতে ১৪১ রানে অলআউট হয় খুলনা। রংপুরের পক্ষে তাহির সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন।
বড় এই জয়ে চলতি বিপিএলে টানা ষষ্ঠ ম্যাচে জিতল রংপুর। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে তাদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত হল। অন্যদিকে টানা চতুর্থ হারে সেমিফাইনালে ওঠার পথ কঠিন হয়ে গেল খুলনার। এই খুলনা আর আসরের প্রথম চার ম্যাচ জিতে আসা খুলনার মধ্যে অনেক পার্থক্য। দুইশ রানের উপরের এই লক্ষ্য তাড়ায় তাদের হয়ে একমাত্র লড়াই চালিয়েছেন বিধ্বংসী ওপেনার অ্যালেক্স হেলস। ৬০ রানে তার বিদায়ের আর কেউ খুলনাকে পথ দেখাতে পারেনি। ফলে তাদের কপালে জুটে ৭৮ রানের বড় হার।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ থেকে বিপিএলের আরেক পর্ব শুরু হয়েছে। দুটি ম্যাচেই বড় স্কোরিং ম্যাচ দেখল দেশের ক্রিকেট ভক্তরা। দুই ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছে আগে ব্যাট করা দলগুলো। রংপুরের দেওয়া ২২০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় হোঁচট খেয়েই শুরুটা করেছিল খুলনা। মাত্র ১৮ রানেই ওপেনার এভিন লুইসকে হারায় তারা। তাদের হয়ে একমাত্র হেলস ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। ব্যাটিং উইকেটেও ডানহাতি ঘূর্ণিতে তাদের কাবু করেছেন লেগস্পিনার ইমরান তাহির। ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান খরচায় তিনি ৫ উইকেট শিকার করেন।
হেলস যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ আশা ছিল খুলনার। শুরুতে দুই উইকেট হারালেও সাবেক এই ইংলিশ ব্যাটারই তাদের পথ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ৩৩ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় তার ৬০ রানের ইনিংসটি থামতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে তারা থামে ১৪১ রানে। খুলনার হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট শিকার করা লুই উড দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেন ১৪ বলে।
তাহির ছাড়া রংপুরের হয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন সাকিব। একটি করে শিকার ধরেছেন জেমস নিশাম, হাসান মাহমুদ ও শেখ মেহেদী।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করা রংপুর প্রথম ২৪ রানেই দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও রেজা হেনড্রিকসকে হারায়। তবে তাদের সেই বিপর্যয় থেকে বের করেন সাকিব-মাহেদীরা। তৃতীয় উইকেটে তারা ১০৯ রানের জুটি বাধেন। সাকিব ৩১ বলে ৬টি করে চার-ছক্কায় ৬৯ রান করেন। ৩৬ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬০ রান করেন মেহেদী। এছাড়া শেষদিকে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ১৩ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। যা রংপুরকে বড় পুঁজি এনে দেয়।
মন্তব্য করুন