ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নৃশংসতায় যখন বিশ্বের অনেকেই নীরবতা বেছে নিয়েছেন তখন গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদ করে বেশ হইচই ফেলে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ওপেনার উসমান খাজা। তার এই প্রতিবাদের প্রত্যেক ধাপে আইসিসির বাধা সত্ত্বেও দমে যাননি তিনি। নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থেকেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। মানবতার জন্য খাজার এমন সাহসের প্রশংসা করেছেন খোদ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেজ।
সদ্য শেষ হওয়া বছরের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থ টেস্টে ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বরতার স্বীকার হওয়া মানুষের সমর্থনে শান্তির বার্তা সংবলিত বিশেষ জুতা পরে খেলতে চেয়েছিলেন খাজা। তবে আইসিসির নিয়মের কারণে তিনি তা পারেননি। তবে জুতা পরতে না পারলেও কালো বাহুবন্ধনী পরে খেলেছিলেন খাজা। যার কারণে আইসিসি দ্বারা তিরস্কৃত হন তিনি।
কিন্তু তাতেও দমে যাননি সাহসী এই ক্রিকেটার। পাকিস্তানের বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টে মেলবোর্নে জুতায় শান্তির প্রতীক পায়রা এবং জলপাই ডালের প্রতীক নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অনুমতি পেলেও খাজাকে আবারও নিয়মের বেড়াজাল আটকে দেয় আইসিসি।
তবে এই অজি দমে যাওয়ার পাত্র নন। দ্বিতীয় টেস্টে নিজস্ব প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে নেন তিনি। মেলবোর্ন টেস্টে খাজা তার জুতায় নিজের দুই মেয়ের নাম লিখে খেলেছেন। নিজের দুই মেয়ের নামও প্রতিবাদেরই অংশ। পার্থ টেস্টে আইসিসির আপত্তির পর খাজা বলেছিলেন, ‘যখন আমি দেখি হাজার হাজার নিরপরাধ শিশু মারা যাচ্ছে, ওই জায়গায় আমি আমার দুটি মেয়েকে কল্পনা করি। কী হতো যদি ওখানে ওরা থাকত?’
ফিলিস্তিন নিয়ে নিজের এমন প্রতিবাদের পর সাবেক ও বর্তমান অনেকেরই সমর্থন পেয়েছেন উসমান খাজা। এবার প্রধানমন্ত্রীও তাকে সমর্থন জানালেন। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কিরিবিলি হাউসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পাকিস্তান ও স্বাগতিক দলের সদস্যদের। সেখানে খাজার সাহসিকতার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেজ।
তিনি বলেন, মানবিক মূল্যবোধের জন্য সে (খাজা) যে সাহস দেখিয়েছে, তার জন্য তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। আলবানেজ আরও বলেন, সে সাহস দেখিয়েছে এবং দল তাকে সমর্থন করেছে এটি দুর্দান্ত জিনিস।
মন্তব্য করুন