আগামীকাল ভোরে মাঠে গড়াবে অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যকার বক্সিং ডে টেস্ট। মাঠের ক্রিকেট গড়ানোর আগে আরও একবার শিরোনাম হয়ে উঠল এই টেস্ট। প্রথম টেস্টের মতো এবারও কারণ অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টেই ফিলিস্তিন নৃশংসতার শিকার মানুষের পাশে থাকতে চেয়েছিলেন সেবার পারেননি আইসিসির অনুমতি না থাকায়। এবারও তার চাওয়া ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকা এবং আরও একবার বাদ সেধে বসেছে আইসিসি।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) শুরু হতে যাওয়া বক্সিং ডে টেস্টে নিজের ব্যাটে ও জুতায় শান্তির প্রতীক হিসেবে ঘুঘু পাখি এবং জলপাই ডালের স্টিকার লাগিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন এই অজি ওপেনার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের খাজাকে অনুমতি দিলেও আইসিসি অনুমতি দেয়নি বলেই খবর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম।
আর খাজার প্রতি আইসিসির এ রকম বৈষম্যমূলক আচরণে আপত্তি অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। খাজার প্রতি আইসিসির এরকম সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছেন তিনি। কামিন্সের মতে, ফিলিস্তিনের প্রতি খাজার সমর্থন এবং মার্নাস ল্যাবুশেনের ধর্মীয় আবেগ দেখিয়ে ঈগলের স্টিকার লাগানো একইদিকে ইঙ্গিত করে।
খ্রিষ্ঠানদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেলের একটি শ্লোকের দিকে ইঙ্গিত করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটের বিপরীত দিকে ঈগলের স্টিকার ব্যবহার করেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার মার্নাস ল্যাবুশেন। খাজাসহ অস্ট্রেলিয়ান দলের সব খেলোয়াড়ই ব্যাটে নিজেদের স্পন্সরের স্টিকার ব্যবহার করে থাকেন। আর এই ব্যাপারে আইসিসির কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই।
প্যাট কামিন্স ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে সমর্থন জানিয়েছেন সতীর্থ উসমান খাজাকে, ‘আমরা সত্যিই উজিকে (উসমান খাজা) সমর্থন জানাই। আমার মনে হয়, সে এমন কিছুর প্রতিবাদ করছে যা সে বিশ্বাস করে আর আমি এও মনে করি সে সম্মানের সঙ্গেই কাজটা করছে।’
‘সকল জীবনই সমান মূল্যবান আর আমার মনে হয় না এটা খুব বেশি আক্রমণাত্মক। একই কথা আমি ঘুঘু প্রতীকের বেলাতেও বলব। উজি এমনই। সে যদি এটা বিশ্বাস করে, তবে সম্মানের সঙ্গেই সে মাথা উঁচু রাখতে পারে। তবে, কিছু নিয়ম আছে। আইসিসি বলেছে তারা এটা অনুমোদন করবে না। তারাই নিয়ম তৈরি করে আর আপনাকে এটা না চাইলেও মানতে হবে।’
উল্লেখ্য, বক্সিং ডে টেস্টকে সামনে রেখে মেলবোর্নে গতকাল অনুশীলন করেছে অজিরা। সেখানে ব্যাটে ও জুতায় শান্তির প্রতীক পায়রা ও ‘01: UDHF’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে অনুশীলন করেন খাজা। ‘01: UDHF’ সংকেতটা সাধারণত ‘সব মানুষ মুক্ত ও স্বাধীন হিসেবে জন্মগ্রহণ করে এবং মর্যাদা ও অধিকারেও তারা সমান’—আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণার রেফারেন্স হিসেবেই ব্যবহৃত হয়।
মন্তব্য করুন