ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ট্রফি জয়ের আশা ছিল ১৯৯২ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের। তবে দলীয় ব্যর্থতায় লিগপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে বাবর আজমের দলের আর এজন্য বেশিরভাগের অভিযোগের তীর ছিল পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের দিকে। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ভক্তদের কাঠগড়ায় ছিলেন তিনি। গুঞ্জন ছিল বাবরকে অধিনায়ক আর রাখা হবেনা। এমনকি বাবর না চাইলেও তাকে সরিয়ে দেয়া হবে, এমন বক্তব্যও শোনা যাচ্ছিল পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোতে।
তবে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়ার আগে নিজেই সরে গেলেন ওয়ানডের সাবেক এই এক নম্বর ব্যাটার। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি—তিন সংস্করণ থেকেই পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বাবর আজম। আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফের সঙ্গে দেখা করেন বাবর। নেতৃত্ব ছাড়লেও তিন সংস্করণেই খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটার।
বাবরকে সাদা বলের ক্রিকেটে অধিনায়ত্ব দেওয়া হয় ২০১৯ সালে। টেস্টের দায়িত্ব পান তার এক বছর পর। চার বছর ধরে অধিনায়কত্ব করলেও তার নেতৃত্বে সাবেক ক্রিকেটারদের খুশি করতে পারেনি। এ সময়ে পাকিস্তানের আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর দল হওয়া ছাড়া অন্য কোন বলার মতো সাফল্যও নেই। এদিকে বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচের পাঁচটিতে হেরে লিগ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে।
টুর্নামেন্টে বাবরও নিজের মান অনুযায়ী খেলতে পারেননি। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটার হিসেবে খেলতে নেমে কোনো শতক পাননি, ৯ ইনিংসে ৪০ গড়ে করেন ৩২০ রান। দলের নেতৃত্বের চাপ বাবরের ব্যাটেও ছাপ ফেলেছে বলে সমালোচনা আরও জোরালো হয়।
নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বুধবার পিসিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে যান বাবর। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও সুপার জানায়, বাবরকে শুধু টেস্ট অধিনায়ক রেখে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল কিন্তু এ প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি।
পিসিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পদত্যাগ-বার্তা পোস্ট করেন বাবর। সেখানে চার বছরের অধিনায়কত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি লিখেন, ‘এ সময়ে আমি মাঠ ও মাঠের বাইরে নানা উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি। তবে সব সময়ই ক্রিকেট–বিশ্বে পাকিস্তানের গৌরব ও সম্মান বজায় রাখার দিকে লক্ষ রেখেছি।’
খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যানেজমেন্টের সমন্বিত অবদানে পাকিস্তান তার নেতৃত্বে সাদা বলের ক্রিকেটে ১ নম্বর দল হওয়ায় এবং সমর্থন জোগানোয় সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বাবর।
পদত্যাগের ঘোষণা দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আজ আমি পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে সব সংস্করণ থেকে পদত্যাগ করছি। এটা কঠিন সিদ্ধান্ত, তবে আমার মনে হয় এটাই সঠিক সময়।’ নতুন অধিনায়ককে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে তিন সংস্করণে খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান বাবর।
জিও সুপার জানিয়েছে, পাকিস্তানের পরবর্তী টেস্ট সিরিজে অধিনায়ক হতে পারেন শান মাসুদ, টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব পেতে পারেন শাহিন আফ্রিদি।
মন্তব্য করুন