ভারত বিশ্বকাপটি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে হতাশার বিশ্বকাপ বললে খুব বেশি ভুল বলা হবে না। সেমিফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে ভারত গেলেও এখন আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত করা নিয়েই টানাটানি পরে গেছে।অবশ্য শেষ ম্যাচে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সাথে ভালই ব্যাটিং দেখিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এক পা দিয়েই রাখল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৭ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রাই দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
শনিবার (১১ নভেম্বর) পুনেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পুরো আসরেই ব্যর্থ বাংলাদেশি টপ অর্ডার আলো ছড়ালো। পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের উদ্বোধনী জুটির পর মিডল অর্ডারের দারুণ ব্যাটিংয়ে এবং শেষদিকে মেহেদি হাসান মিরাজের কার্যকরী ইনিংসে সবমিলিয়ে আসরে প্রথমবারের মতো তিনশ পেরিয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। পুনেতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান এসেছে তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে। তাছাড়া ৪৫ রান করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অজিদের হয়ে জাম্পা ও শন অ্যাবট দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। বাংলাদেশের তিন ব্যাটার হয়েছেন রান আউট।
পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার লিটন ও তানজিদ। সতর্ক শুরু হলেও পরে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তারা। একপর্যায়ে দলীয় ৭৬ রানে তানজিদের বিদায়ে ভাঙে এই উদ্বোধনী জুটি। শন অ্যাবটের শর্ট বলে তার কাছেই ক্যাচ দিয়েছেন তানজিদ। তার ইনিংস থেমেছে ৩৪ বলে, ৩৬ রান করে। তার সঙ্গী লিটনও বেশিক্ষণ টিকলেন না। জাম্পার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিলেন টাইগার এই ওপেনার। ৪৫ বলে পাঁচ চারে ৩৬ রান করেন লিটন। তার বিদায়ে ভাঙে ৩২ বল স্থায়ী ৩০ রানের জুটি।
দুই ওপেনার ফিরে গেলেও রানের গতি থামতে দেননি শান্ত ও হৃদয়। দুজনের আগ্রাসী জুটিতে দ্রুত এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে দুজনের দোষেই ভাঙল ৬৬ বল স্থায়ী ৬৩ রানের এই জুটি। অহেতুক এক রান আউটে কাঁটা পড়লেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫ রানের জন্য অর্ধশতক হয় নি তার।
শান্তর পর রান আউটে কাটা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। ২৮ বলে ইনিংসে ১ চারের সঙ্গে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩টি। কিন্তু ৩৬তম ওভারে স্লো পুশ করে দ্রুত রান নিতে গিয়ে আউট হয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ রান।
আসরটা খুব একটা ভালো যায়নি হৃদয়ের। প্রত্যাশার সিকি ভাগও পূরণ করতে পারেননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তবে শেষ ম্যাচে এসে কিছুটা হলেও নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করলেন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬১ বলে স্পর্শ করলেন হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৭৯ বলে ৭৪ রান করে আউট হয়েছেন তিনি।
টপ অর্ডার ব্যাটারদের সবাই রান পেলেও আজ সুবিধা করতে পারেননি মুশফিক। উইকেটে এসে মানিয়ে নিতে খানিকটা সময় লেগেছে তার। তবে খানিকটা সময় নিয়ে দ্রুত রান তোলায় মনযোগ বাড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। জাম্পাকে স্লগ সুইপে ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। তবে রানের গতি বাড়াতে গিয়েই যেন বিপদ ডেকে আনলেন। এগিয়ে এসে মিড উইকেটের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন প্যাট কামিন্সের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ২১ রান।
মুশফিক ফেরার পর দারুণ ব্যাটিং করেছেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ২০ বলে করেছেন ২৯ রান। তিনি ব্যাটিং করেছেন প্রায় ১৪৬ স্ট্রাইকরেটে। তবে মিরাজ ফেরার পর আর কেউই তেমন কিছু করতে পারেননি। মাহেদি-নাসুমরা চেষ্টা করেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ফিনিশিংটা আরেকটু ভালো হলে আরো ২০-৩০ রান বেশি হতে পারতো।
মন্তব্য করুন