ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপটি বাংলাদেশের জন্য খুবই বাজে যাচ্ছে। এক জয় এবং চার পরাজয়ে ১০ দলের মধ্যে সবার শেষে অবস্থান সাকিবদের। যার সর্বশেষটি এসেছে মঙ্গলবার(২৪ অক্টোবর) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ১৪৯ রানের বড় পরাজয়ের পরেও এই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারের চতুর্থতম শতক।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একের অধিক বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি । দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া পাহাড়সম ৩৮৩ রানের লক্ষ্যে যখন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ তখনই এক প্রান্তে আগলে রেখে যুদ্ধ করে গেছেন রিয়াদ একাই। তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরিও। তার সেঞ্চুরির ধরনটাই এমন ছিল যে বাংলাদেশের চতুর্থ পরাজয়ের পরও ক্রীড়াঙ্গনের আলোচনার বিষয় এখন মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরি। অবশ্য তার কারণও কম নয় অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে রিয়াদের ৪৯ তাকে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ করে দেয়। তবে সুযোগ পেলেও প্রথম ম্যাচে তার ব্যাট করা লাগেনি। পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিলেন একাদশের বাইরে। এরপর নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন চল্লিশোর্ধ্ব রান। কিন্তু সেসব ম্যাচে তার কাঁধে ছিল ডেথ ওভারে পুঁজি বড় করার চ্যালেঞ্জ। আর দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে যথেষ্ট সময় পেতেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মাহমুদউল্লাহ।
রাবাদার বলে ফাইন লেগে সিঙ্গেলে নিয়ে তিনি পৌঁছান সেঞ্চুরিতে! জানতেন, এই সেঞ্চুরি দলের জয় এনে দিচ্ছে না। তবু লাফ দিয়ে উদ্যাপন করেছেন, এরপর ড্রেসিংরুমের দিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করেছেন ওপরের দিকে। দিয়েছেন সিজদা। মাহমুদউল্লাহর এই উচ্ছ্বাস যেন তাকে ঘিরে বহু বিতর্কের উত্তর।
দল থেকে বাদ পড়ার পরর কখনও কাউকে দোষ দেননি মাহমুদউল্লাহ। একাকী পরিশ্রম করেছেন, অটুট বিশ্বাস রেখেছিলেন আল্লাহর ওপর। তাইতো সেঞ্চুরি করে মাঠে সেজদায় অবনিত হয়ে মহান আল্লাহকে শুকরিয়া জানালেন। এর আগে এক আঙুল উঁচিয়ে হয়তো বোঝালেন, ‘এটি আমার কাজ নয়, সব ওপরওয়ালার অবদান’ কিংবা ‘ওপরে একজন আছে, তিনিই সবকিছু ফয়সালা করেন!’
দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ৩৮৩ রানের জবাবে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২৩৩ রানে। কিন্তু টাইগারদের এই ইনিংস থেমে যেতে পারত একশ রানের আগে-পরে। সেই পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার বড় অবদান তো রিয়াদেরই। তিনি যখন ব্যাটে নেমেছিলেন তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ছিল ৫ উইকেটে মোটে ৬০ রান। শঙ্কা চেপে বসেছিল বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হারের। সেই লজ্জার হাত থেকে টাইগারদের বাঁচান বাংলাদেশের বহু বছরের অভিজ্ঞ সেনানি।
মন্তব্য করুন