ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়কে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে অবশেষে বিসিবি স্বীকার করেছে নিজেদের ভুল। হৃদয়ের শাস্তি কমানো হয়েছিল চাপের মুখে, সেটাই হয়ে গেল বুমেরাং। তাওহীদ হৃদয়ের এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা এবার আবারও বলবৎ হচ্ছে। আর আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সিদ্ধান্ত বদলে থাকছেন বিসিবিতে।
বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগ সম্প্রতি যে সিদ্ধান্তে হৃদয়ের এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমানো হয়েছিল, সেটিকে এখন ভুল প্রক্রিয়া বলে স্বীকার করেছে তারা। ফলে নিষেধাজ্ঞাটি আবার কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশের গণমাধ্যম। নিয়ম অনুযায়ী এখন সিসিডিএমের নবগঠিত টেকনিক্যাল কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে হৃদয়ের বিষয়ে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে বিসিবিতে আয়োজিত এক বৈঠকে আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান ও শরফুদ্দৌলার মধ্যে আলোচনা হয়। সভা শেষে ইফতেখার রহমান জানিয়েছেন, শরফুদ্দৌলা তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘সৈকত ভাইকে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তিনি নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।’
এদিকে, হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা কমানো নিয়ে যে ভুল হয়েছে, তা স্বীকার করে ইফতেখার বলেন, ‘আমরা ভুল করেছি, প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল না। শাস্তি কমানো বা মওকুফ করার এখতিয়ার শুধু সিসিডিএম কিংবা টেকনিক্যাল কমিটির।’
সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটিতে পরিবর্তন আসছে। এনামুল হকের পদত্যাগের পর এখন দায়িত্ব পাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক নাজমূল আবেদীন ফাহিম।
১২ এপ্রিল মিরপুরে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে তাওহীদ হৃদয়কে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয় তাকে। একই ঘটনায় মোহামেডানের পেসার এবাদত হোসেনকেও জরিমানা করা হয় ৪০ হাজার টাকা।
শাস্তির পর সংবাদমাধ্যমে দেওয়া হৃদয়ের মন্তব্যে (‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশা আল্লাহ’) বিসিবির ভেতরে অসন্তোষ তৈরি করে যার ফলে তার নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে দুই ম্যাচ করা হয়। তবে মোহামেডান ও হৃদয় তা মেনে নেয়নি। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ২০ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে খেলেছেন হৃদয়।
মোহামেডান সিসিডিএমে শাস্তি হ্রাসের আবেদন করলেও কোনো ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে আম্পায়ার্স বিভাগকে চাপ প্রয়োগ করে তা কমাতে বাধ্য করে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত ছিল পুরোপুরি বিধিবহির্ভূত, কারণ আম্পায়ার্স বিভাগের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ারই নেই।
সবকিছু পর্যালোচনার পর বিসিবি আবারও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যাচ্ছে হৃদয়ের বিরুদ্ধে। তার দল মোহামেডানের সুপার লিগে এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। এখন টেকনিক্যাল কমিটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
মন্তব্য করুন