বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আগামী ২০ এপ্রিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গড়াবে প্রথম টেস্ট। তবে সিরিজ শুরু হওয়ার প্রাক্কালে এখনো বড় একটা প্রশ্ন থেকে গেছে—এই ম্যাচগুলো দেশের দর্শকরা কোথায় দেখতে পাবেন?
এখনও পর্যন্ত এই সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যার ফলে, দেশীয় কোনো টিভি চ্যানেল বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে চুক্তি হয়নি। এ কারণে দেখা দিয়েছে মিডিয়া ব্ল্যাকআউটের শঙ্কা।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হোম সিরিজগুলো প্রচার করেছে টি-স্পোর্টস ও জিটিভি, মিলেনিয়াম মিডিয়া কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে বিসিবির চুক্তির মাধ্যমে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০২৪ সালের অক্টোবরে শেষ হওয়া সিরিজের মধ্য দিয়েই সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর থেকে নতুন কোনো সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বোর্ডের আর চুক্তি হয়নি।
বিজ্ঞাপন বাজারের মন্দা, টেস্ট ক্রিকেটের তুলনামূলক কম দর্শকপ্রিয়তা এবং বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তার কারণেই আগের সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহ দেখায়নি বলে জানা গেছে। ফলে, সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে অথচ সম্প্রচারের কোনো নিশ্চয়তা নেই — এমন অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে বিসিবি ও ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে শেষ পর্যন্ত কেউ না নিলে টি-স্পোর্টস স্বত্ব নিতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
এমন পরিস্থিতিতে এখন ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ড। বিসিবি যদি শেষ পর্যন্ত বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারে, তবে রাষ্ট্রায়ত্ব এই টিভি চ্যানেলেই দেখানোর উদ্যোগ নিতে পারে। অতীতে এমন উদাহরণ আছে যেখানে বিটিভিই শেষমেশ দায়িত্ব নিয়ে দেশের মানুষের কাছে খেলা পৌঁছে দিয়েছে।
অবশ্য দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এটি বেশ হতাশার খবর। যারা ঘরে বসে টিভি স্ক্রিনে বা মোবাইলে প্রিয় টাইগারদের টেস্ট ম্যাচ দেখতে চান, তাদের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে বিসিবির জন্যও এটি ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সম্প্রচার না থাকলে সেটি দেশের ক্রিকেটের ব্র্যান্ড ভ্যালু, দর্শক আকর্ষণ ও স্পন্সরশিপের দিক থেকে বড় ধাক্কা।
বোর্ডের পক্ষ থেকে শেষ মুহূর্তে কোনো বেসরকারি চ্যানেলের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সময় খুবই অল্প। না হলে, বিটিভির মাধ্যমেই হয়তো দেশের মানুষের খেলা দেখার সুযোগ করে দেওয়া হবে।
এখন অপেক্ষা, বিসিবি দ্রুত এই সংকটের সমাধান করতে পারে কি না — সেটাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন