বাংলাদেশ ক্রিকেটের গত দেড় দশক ছিল ‘পঞ্চপাণ্ডবের’ অধ্যায়। দেশকে একের পর এক সাফল্য এনে দেওয়া সেই পাঁচ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের মধ্যে এখন কেবল টেস্টে আছেন মুশফিকুর রহিম। তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিদায় নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন, আর সাকিব আল হাসান রাজনীতিতে জড়ানোয় জাতীয় দলের সঙ্গে তার সম্পর্ক শিথিল হয়ে গেছে।
এই পরিবর্তনের সময়টায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব পড়েছে তরুণ ও মধ্য-অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ওপর। মেহেদি হাসান মিরাজ সেই পরিবর্তনের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় সদস্য। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকেই নিজের দক্ষতা দিয়ে নজর কেড়েছেন, হয়েছেন দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার। সাময়িকভাবে অধিনায়কত্বও সামলেছেন। এখন তার লক্ষ্য, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরেক ধাপে এগিয়ে নেওয়া।
শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মিরাজ বলেন, ‘প্রত্যেকটা মানুষেরই একসময় সরে যেতে হয়। সিনিয়ররা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন, দলকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছেন। এখন আমাদের কাজ এখান থেকে আরও ওপরে তোলা।’
বাংলাদেশের এখনও বড় কোনো শিরোপা জয়ের স্বাদ না পাওয়াটা মিরাজের মনে দাগ কেটেছে। তাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তার চোখ ট্রফির দিকে, ‘আমরা এখনও বড় কোনো ট্রফি জিততে পারিনি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত অন্তত একটা বড় টুর্নামেন্ট জেতা। এটা হলে আমাদের প্রজন্মের জন্য দারুণ কিছু হবে।’
বর্তমান দলে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৭-১০ বছর ধরে খেলছেন। তাই নিজেদের ‘নতুন’ বলা যাবে না বলে মনে করেন মিরাজ। তার মতে, অভিজ্ঞ ও অপেক্ষাকৃত তরুণদের সমন্বয়ে দলকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
‘আমরা যারা দলে আছি, প্রত্যেকের পারফর্ম করা জরুরি। ৬-৭ জন ক্রিকেটার আছে, যারা ৮-১০ বছর ধরে খেলছে। নতুন ক্রিকেটারও আছে, যারা ২-৩ বছর খেলেছে। এই অভিজ্ঞ ও নতুনদের মিশেলে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী মিরাজ মনে করেন, এটি এগিয়ে যাওয়ার সঠিক সময়। ‘আমাদের এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। মুশফিক ভাই বা অন্য সিনিয়ররা ৭-৮ বছর খেলেই দলকে এক জায়গায় নিয়ে গেছেন। আমরাও অনেকদিন ধরে খেলছি, এখন আমাদের দায়িত্ব দলকে আরেক ধাপে তোলা।’
বাংলাদেশের সামনে বড় লক্ষ্য ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কিন্তু বিশ্বকাপের কয়েক মাস আগে প্রস্তুতি শুরু করলে ফল পাওয়া কঠিন হবে বলে মনে করেন মিরাজ।
‘দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকাটা জরুরি। সঠিক সমন্বয় দরকার। একজন ক্রিকেটারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে তাকে যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমাদের যে ওয়ানডে ম্যাচগুলো আছে, সেখানে ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার সুযোগ দিতে হবে। যদি আমরা শেষ মুহূর্তে গিয়ে দল সাজাতে চাই, তাহলে চ্যালেঞ্জ বড় হবে।’
মন্তব্য করুন