মাত্র ক’দিন আগেই ওয়ানডে ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম ভরসার নাম মুশফিকুর রহিম। ধারণা করা হচ্ছিল একই পথে যাবেন তার দীর্ধ দিনের সতীর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। সেই ধারণাকে সত্যি করে এবার নিজের বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন ডিপেন্ডেবল এই ক্রিকেটার।
এর আগে গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রকাশিত কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায় নাম ছিল মাহমুদউল্লাহর। তবে নিজেই সেই তালিকা থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ার ফলে ধারণা হয় যে তিনি ক্রিকেটকে বিদায় বলতে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত তাই সত্য হলো।
আজ বুধবার (১২ মার্চ) ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায়ের ঘোষণা দেন। তার স্ট্যাটাসটি কালবেলার পাঠকদের জন্য হুবুহ তুলে ধরা হলো,
‘সমস্ত প্রশংসা একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমি আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষভাবে আমার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছেন।
একটি বিশেষ ধন্যবাদ আমার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, বিশেষ করে আমার শ্বশুরকে। আর সবচেয়ে বড় কৃতজ্ঞতা আমার ভাই এমদাদ উল্লাহর প্রতি, যিনি ছোটবেলা থেকে আমার কোচ ও পরামর্শক হিসেবে আমার পাশে ছিলেন।
এছাড়াও, আমার স্ত্রী ও সন্তানদের ধন্যবাদ জানাই, যারা সব সময় আমার শক্তি হয়ে পাশে থেকেছে। আমি জানি, রায়েদ আমাকে লাল-সবুজের জার্সিতে খুব মিস করবে।
সবকিছু সবসময় পরিপূর্ণভাবে শেষ হয় না, তবে যা ঘটে তা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। শান্তি… আলহামদুলিল্লাহ।
আমার দল ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভকামনা রইলো।’
২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু করেছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচও ছিল ওয়ানডে ফরম্যাটে—গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে মাহমুদউল্লাহ আগেই বিদায় নিয়েছিলেন। ২০২১ সালে হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানান তিনি। এরপর ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে হায়দরাবাদে ম্যাচ খেলে আনুষ্ঠানিকভাবে টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর নেন।
২৩৯টি ওয়ানডে খেলা মাহমুদউল্লাহ তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ৪৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তাঁর ওপরে আছেন কেবল মুশফিকুর রহিম (৪৭০) ও সাকিব আল হাসান (৪৪৭)।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি চলাকালীনই তাঁর অবসর নিয়ে ক্রিকেট মহলে আলোচনা চলছিল। বিশেষ করে রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বলে ৪ রানের ইনিংসের পর সমালোচনাও হয়েছে। তবে সেসময় অবসর নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মাহমুদউল্লাহ।
মন্তব্য করুন