বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যখন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন ও ম্যাচ ফি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, তখন দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এখনো ২০২৪ সালের শেষ চার মাসের পারিশ্রমিক পাননি। বিসিবির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। জানা যায়, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জটিলতার কারণে তার বেতন পরিশোধ সম্ভব হয়নি।
২০২৪ সালের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সাকিবসহ পাঁচ ক্রিকেটারকে সব ফরম্যাটের চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। বিসিবির তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চার মাসের বেতন বাবদ সাকিবের পাওনা ৪৮ লাখ টাকা (প্রায় ৩৮,৪০০ মার্কিন ডলার), যা এখনো তার হাতে পৌঁছেনি।
একজন বোর্ড কর্মকর্তা জানান, ‘সাকিবের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ থাকার কারণে আমরা তার বেতন পরিশোধ করতে পারিনি। তবে এটি তার প্রাপ্য এবং যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’
সাকিব ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চলাকালীন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন এবং ইচ্ছা প্রকাশ করেন দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলার। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তিনি দেশে ফেরেননি।
এই সময়ের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগ ওঠে, যা আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বিসিবি তখনও তাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলার অনুমতি দেয়, তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর আরও একটি ধাক্কা আসে—নভেম্বর ৬, ২০২৪-এ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়। পরবর্তীতে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার পরিকল্পনা করলেও সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে দলে জায়গা পাননি।
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন জানিয়েছেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সাকিব তার পারিশ্রমিক পাবেন। এটি তার প্রাপ্য এবং বিসিবি তার প্রতিশ্রুতি রাখবে।’
রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া কি সাকিবের ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে? জাতীয় দলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের সমাপ্তি কি এভাবেই হবে? সময়ই হয়তো সব প্রশ্নের উত্তর দেবে। তবে আপাতত বিসিবির কাছ থেকে পাওনা অর্থের অপেক্ষায় আছেন সাকিব আল হাসান।
মন্তব্য করুন