বরিশালে দর্শকদের চেয়ার ছোড়াছুড়িতে ও হুড়োহুড়িতে পণ্ড হয়ে গেছে বিপিএলের শিরোপা জয়ের উৎসব। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফরচুন বরিশাল শিরোপা জয় উপলক্ষে রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) নগরীর বেলস পার্ক মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল এ উৎসব।
তবে আয়োজক কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাবে এ অনুষ্ঠান পণ্ড হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ট্রফি প্রদর্শন এবং দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সেখানে কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল। তবে লাখো জনতার ভিড় সামলাতে যতটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার ছিল তা না থাকার পাশাপাশি আয়োজক কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি তার। চেয়ার ছোঁড়া ও হুড়াহুড়িতে আহত হন সংবাদকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন। বিক্ষুব্ধ জনতার জুতা-চেয়ার নিক্ষেপ আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের মধ্য দিয়ে পণ্ড হয়ে যায় সব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে মূল মঞ্চের চারপাশে প্রচণ্ড ভিড়ে দম বন্ধ করা অবস্থা সৃষ্টি হয়। নারী ও শিশুরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। অনুষ্ঠানটি পুরোভাগেই অব্যবস্থাপনার কারণে উপস্থিত সবাইকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শোনা যায়। অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও ছিল ঢিলেঢালা। ফলে ঠেলাঠেলি-ধাক্কাধাক্কির মধ্যে সেখানে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ফরচুন বরিশাল দলকে একনজর দেখতে নগরের কাশিপুর থেকে বেলস পার্কে এসেছিলেন সুমি। তিনি বলেন, ‘বেলা আড়াইটায় এখানে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। ভ্যাপসা গরম, ঠাসাঠাসিতে বাচ্চাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।’
অন্য এক দর্শক শাহীন সুমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত বড় অনুষ্ঠানে যে ধরনের নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা থাকা দরকার, তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। আড়াইটার অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে চারটার পরে। এখানে কনসার্ট হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা এত বিপুল মানুষকে মাঠে ধরে রাখার জন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের উচ্ছ্বাস শেষ দিকে ক্ষোভে রূপ নেয়। খেলোয়াড়েরা যখন মঞ্চে ওঠেন, তখন মানুষের আগ্রহে ভাটা পড়ে এবং ক্ষোভে সামনে থাকা অনেকে মঞ্চে বোতল ছুড়ে মারেন। ঠেলাঠেলি-মারামারিতে লিপ্ত হওয়ায়টা অনুষ্ঠান অনেক পণ্ড হয়ে যায়।
ফরচুন বরিশালের কর্ণধার মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসনকে জানিয়ে সবকিছু পেশাদারিত্বের সঙ্গেই আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষের অত্যাধিক চাপ ছিল, যা পরে আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। অনুষ্ঠানে ব্যান্ড তারকা হাসানের গান পরিবেশনের কথা ছিল, সেটি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শুরু থেকে সবই ঠিক ছিল। কিন্তু ওখানে কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। আবার যাদের দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য লোকজন এসেছেন, সেই খেলোয়াড়েরা মঞ্চে উঠে মাত্র এক মিনিট অবস্থান করায় মানুষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন। এটা আয়োজকদের দোষ। পুলিশের এ ক্ষেত্রে কোনো কিছুই করণীয় ছিল না।
মন্তব্য করুন