বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরে ব্যাটারদের জন্য স্বস্তির এক বিষয় হচ্ছে তুলনামূলক ভালো উইকেট। আগের মৌসুমগুলোর মতো লো-স্কোরিং ম্যাচের আধিপত্য এবার কমই দেখা গেছে। আর এমন ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে দেশি ব্যাটাররাও নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করছেন। খুলনা টাইগার্সের ওপেনার নাঈম শেখ সেই প্রমাণ আরও শক্তিশালী করলেন রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আজ ৫৫ বলে শতরান পূর্ণ করেন নাঈম। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৪৬ রানের জয় পায় খুলনা টাইগার্স। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠে তার হাতে। আর ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নাঈম দিলেন স্পষ্ট বার্তা—দেশি ব্যাটারদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়, বরং ভালো উইকেট দেওয়া উচিত।
ম্যাচ শেষে নাঈম দাবি করেন বাংলাদেশিরা বাউন্ডারি মারতে পারে না কথাটি ভুল। ভালো উইকেট দিলে দেশিরাও পারবে। বাইরের দেশে সবাই যেন শুধু ছক্কা-চারে খেলে দেশের ক্রিকেটাররা সেটা পারে না—এই ধারণাটা একদম ভুল বলে মনে করেস তিনি। রেঞ্জ হিটিংয়ে বাংলাদেশিরাও দুর্দান্ত, শুধু এরজন্য উপযুক্ত উইকেট দরকার।
এই ওপেনার মনে করেন, ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে দেশি ব্যাটাররা নিয়মিত বড় ইনিংস খেলতে পারবে। ‘ভালো উইকেট থাকলে সবসময় ব্যাটাররা রান করতে পারবে। দেখুন, আজকের ম্যাচেই আমি রান করতে পেরেছি। আগে উইকেট কঠিন থাকায় দেশিদের নিয়ে প্রশ্ন উঠত—চার-ছয় মারতে পারে না, স্ট্রাইক রেট বাড়াতে পারে না। কিন্তু যখন কন্ডিশন ব্যাটারদের পক্ষে থাকে, তখন আমরাও রান তুলতে পারি,’ বললেন নাঈম।
নাঈম শেখের এবারের বিপিএলে ফর্ম বেশ ভালো। যদিও দুই ম্যাচ বাদে বেশিরভাগ ম্যাচেই ভালো শুরুর দেখা পেয়েছেন, তবে বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি। আজ সেটির পূর্ণতা পেয়েছে। নিজের ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই ফ্লো ধরে রাখার চেষ্টা করছিলাম। ৭০-৮০ রানের ইনিংস ওপেনার হিসেবে দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়। চেষ্টা ছিল লম্বা ইনিংস খেলার, আজ সেটি করতে পেরেছি।’
নিজের উন্নতির পেছনে কোচদের অবদানের কথা জানাতে ভুললেন না নাঈম। ‘ঘরোয়া ক্রিকেটের অনেক কোচের কাছ থেকে শিখেছি। বাবুল স্যার, সোহেল স্যার, আনোয়ার ভাই—অনেকেই আমাকে গাইড করেছেন। মাইন্ড ট্রেনিংয়ের দিকেও অনেক মনোযোগ দিচ্ছি, সেটা কাজে লাগছে। শৃঙ্খলা মেনে চলার দিকেও জোর দিচ্ছি। পরিবার সবসময় পাশে থেকেছে, সেটাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’
নাঈমের এই দুর্দান্ত ইনিংস প্রমাণ করল, ভালো উইকেট পেলে দেশি ব্যাটাররাও বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে। তাহলে কি এবার মিরপুরের উইকেট আরও ব্যাটিংবান্ধব হবে? উত্তর সময়ই দেবে।
মন্তব্য করুন