ভারতীয় ক্রিকেটের মহাতারকা বিরাট কোহলি দীর্ঘ ১২ বছরের বিরতিতে আবারও রঞ্জি ট্রফিতে ফিরছেন। ৩০ জানুয়ারি দিল্লির হয়ে রেলওয়েজের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচে মাঠে নামার সম্ভাবনা নিশ্চিত করেছে দিল্লি ও জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিডিসিএ)। এর আগে ঘাড়ে স্টিফনেসের কারণে সাউরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২৩ জানুয়ারির ম্যাচে অংশ নিতে পারেননি কোহলি।
ডিডিসিএর একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘বিরাট কোহলি রঞ্জি ট্রফির ৩০ জানুয়ারির ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। সাউরাষ্ট্রের বিপক্ষে তার ঘাড়ের সমস্যার জন্য তিনি খেলতে পারেননি। তবে দিল্লির হয়ে এত বছর পর খেলতে চাওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি।’
বিরাট কোহলি দিল্লির হয়ে ২৩টি রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ খেলেছেন এবং সেখানে ৫০.৭৭ গড়ে ১৫৭৪ রান করেছেন। তার ক্যারিয়ারে পাঁচটি সেঞ্চুরি রয়েছে। ২০০৯-১০ মৌসুমে তিনি মাত্র তিন ম্যাচে ৯৩.৫০ গড়ে ৩৭৪ রান করে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দেন।
কোহলির রঞ্জি ক্যারিয়ারের একটি স্মরণীয় মুহূর্ত আসে ২০০৬ সালে, যখন কর্ণাটকের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন তার বাবা মারা যান। কোহলি তখন অপরাজিত ৪০ রানে ব্যাট করছিলেন। ব্যক্তিগত শোক সত্ত্বেও তিনি পরদিন মাঠে ফিরে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৯০ রান করেন।
টেস্ট ক্রিকেটে কোহলি সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে একটি সেঞ্চুরি করলেও পাঁচ ম্যাচের সিরিজে তার মোট রান ছিল মাত্র ১৯০। ধারাবাহিকভাবে অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি তাড়া করার কারণে তিনি আটবার একই রকম আউট হন।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) সম্প্রতি কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়দের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ না করলে জাতীয় দলে নির্বাচনের যোগ্যতা ও কেন্দ্রীয় চুক্তি বজায় রাখা কঠিন হবে।
বিসিসিআইয়ের একটি বিবৃতি অনুসারে, ‘খেলোয়াড়দের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ জাতীয় দলের সাথে তাদের সংযোগ ধরে রাখার পাশাপাশি প্রতিভা উন্নয়ন ও ম্যাচ ফিটনেস নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। কোনো ব্যতিক্রম কেবল অসাধারণ পরিস্থিতিতে বিবেচিত হবে এবং এটি নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের অনুমোদন সাপেক্ষে হতে হবে।’
রোহিত শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋষভ পন্ত এবং শুভমান গিল ইতোমধ্যে ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রঞ্জি ট্রফির পরবর্তী রাউন্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন।
কোহলির এই প্রত্যাবর্তন তার অনুরাগীদের জন্য যেমন আনন্দদায়ক, তেমনি ঘরোয়া ক্রিকেটে তার অভিজ্ঞতা তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হবে। এখন দেখার বিষয়, রঞ্জি ট্রফির মঞ্চে বিরাটের প্রতিশ্রুতি ও পারফরম্যান্স ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন উদ্যম আনতে কতটা সফল হয়।
মন্তব্য করুন