বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসর নিয়ে যে উচ্চাশা ছিল, তার বিপরীতে সৃষ্টি হয়েছে একের পর এক বিতর্ক। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই টিকিট বিতরণ নিয়ে বিশৃঙ্খলা, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বকেয়া, এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অদক্ষতা তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এসবের প্রেক্ষিতে ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন একে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়েছেন।
চট্টগ্রামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুজন বিপিএলের বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। টিকিট বিতরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান মানুষের টিকিট কাটতে গিয়ে যে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি মনে করেন দেশে অনলাইনে টিকিট কেনার মতো সুযোগ এখনো সব শ্রেণির মানুষের জন্য সহজলভ্য নয়। সেক্ষেত্রে রিকশাচালক বা সাধারণ মানুষ খেলা দেখতে চাইলে বিসিবি কী করবে? তাই সেবিষয়টা ভাবা উচিত বলে মনে করেন সুজন
বিপিএলের আরো বড় বিতর্কের বিষয় হলো খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক। রাজশাহীর খেলোয়াড়রা তাদের বকেয়া পাওনা না মেটানোয় অনুশীলনই বর্জন করেছেন। এ বিষয়ে সুজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ছয়টি ম্যাচ যাওয়ার পরেও একটি দল এখনও খেলোয়াড়দের টাকা দেয়নি। যেটি তার কাছে খুবই লজ্জাজনক মনে হয়েছে। তিনি এ প্রশ্নও তুলেন ব্যাংক গ্যারান্টি থাকলে বিসিবি কেন তা ব্যবহার করে খেলোয়াড়দের প্রাপ্য দিচ্ছে না? তিনি মনে করেন এসব চলতে দিলে বিপিএলের মান পড়ে যাবে। যে কারও ৮ কোটি টাকা না থাকলে দল কেনার সাহস করা উচিত নয় বলেও জানান সাবেক এই ক্রিকেটার।
এদিকে সুজনের দল ঢাকা ক্যাপিটালস এই আসরে ব্যর্থতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আট ম্যাচে মাত্র একটিতে জয় পাওয়ার পর তারা পয়েন্ট তালিকার একদম তলানিতে। দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে সুজন বলেন, 'এটা স্কুল ক্রিকেট নয় যে কাউকে শাসিয়ে শেখানো যাবে। আমাদের বিদেশি খেলোয়াড়দের মানসম্মত ফাস্ট বোলার বা স্পিনার নেই। মোমেন্টাম হারানোর পর আমরা আর ফিরতে পারছি না। প্রতিদিন হারতে থাকলে খেলোয়াড়দের মোটিভেট করাও কঠিন হয়ে যায়।'
এমন পরিস্থিতি দেখে সুজনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেট ব্যক্তিত্বের হতাশা অস্বাভাবিক নয়। খেলোয়াড়দের প্রাপ্য পরিশোধ না হওয়া, টিকিট বিতরণে বিশৃঙ্খলা, ও মানসম্মত আয়োজনের অভাব দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল যদি এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারে, তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
মন্তব্য করুন