বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ ও পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের দ্বন্দ্বের খবর ইতিমধ্যে সবারই জানা। তবে দুজনের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। তারপরও যেন ঘটনাটি থেকে সরা যাচ্ছে না। দুজনের দ্বন্দ্বের খবরে লজ্জা প্রকাশ করেছেন বিসিবির সাবেক পরিচালক ও ঢাকা ক্যাপিটাল কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। একই সঙ্গে নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মধ্যে ‘লোভ লালসা’ দেখছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ২নং গ্রাউন্ডে ঢাকার অনুশীলনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
আগস্টে দেশের ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিসিবিতে এসেছিলেন ফারুক ও ফাহিম। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত হয়ে ফারুক হন সভাপতি ও ফাহিম হন পরিচালক। কিন্তু এই অল্প কয়েক মাসেই দুজনের মধ্যকার সম্পর্কের মধ্যে অবনতি দেখা গেছে। সেটা গণমাধ্যমেও চলে এসেছে। কিন্তু আগের বোর্ডে সেটা খুব একটা দেখা যায়নি! বিসিবি থেকে কয়েক মাস আগেই পদত্যাগ করা সুজনের কাছে এই দ্বন্দ্বের খবর কি বার্তা দেয়? সুজন বলেছেন, ‘দুজনই সাবেক ক্রিকেটার, তাদের কেন ইগোর সমস্যা হবে? তারা তো ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য আসছেন। তারা যখন আসেন, তখন তো অনেক কমিটমেন্ট দেখেছিলাম।’
বিশেষ করে বোর্ডে আসার আগে বেশ কয়েক জায়গায় নিজের পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছিলেন ফাহিম। সে প্রসঙ্গও সামনে আনলেন সুজন, ‘বিশেষ করে ফাহিম ভাই তো বলছিলেন, উনি অনেক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করছেন, দেখছেন, চিন্তা করছেন। তো সেগুলো আমি এখন দেখতেছি না। এখন দেখতেছি লোভ লালসার মতো হয়ে যাচ্ছে যে, ক্রিকেট অপারেশনস না পেলে আমি কাজ করব না, পদত্যাগ করব। এটা তো লোভ-লালসা!’
বিসিবির স্ট্যান্ডিং কমিটি এখনো তৈরি করতে পারেননি ফারুক আহমেদ। কে কোন বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন, সেটা নিয়েই নাকি দ্বন্দ্বের শুরু—এমন গুঞ্জন ছিল মিরপুরেও। কিন্তু সেভাবে কেউ বিষয়টি খোলাসা করেননি। ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন নারী বিভাগের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে ফাহিমকে। কিন্তু ক্রিকেট অপারেশন্স নিয়েই যে দ্বন্দ্বটা বেড়েছে সেটা সুজনের এই কথায় আরও স্পষ্ট, ‘ক্রিকেট অপারেশনসই নিতে হবে কেন? আমি যদি অন্য কমিটির চেয়ারম্যান হই, সেখানে সার্ভ করতে পারব না কেন? উনি (ফাহিম) কি ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার? ওনার আগে তো আকরাম ভাই ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার। উনি চাইতে পারেন। কারণ আকরাম ভাই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবং অপারেশনসের চেয়ারম্যান ছিলেন।’
তারপরও বোর্ডের দুই পরিচালকের মধ্যকার সম্পর্কের এমন অবনতি দেখে লজ্জা পান জানিয়ে সুজন বলেছেন, ‘যখন তাদের এই মনোভাব দেখি তখন খারাপ লাগে। দুজনই সিনিয়র মানুষ, আমরা যাদেরকে অনেক সম্মান করি। তাদের যখন এমন দেখি, ক্রিকেটার হিসেবে লজ্জিত হই। আসলেই আমরা কী ক্রিকেটাররা এত বেশি লোভী নাকি!’
বিসিবিতে লম্বা সময় পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন সুজনও। তবে ফারুক আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। এখন বোর্ডের বাইরে থেকে বোর্ডের মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখছেন তিনি।
মন্তব্য করুন